নির্বাচন নিয়ে নাটকীয়তা থামছেই না, সিনিয়ররাও জানেন না এর সমাধান কোথায়?

নাটকীয়তা যেন কোনোভাবেই থামছে না! গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন হলেও এখন এর সমাধান হয়নি। পুর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে অধিকাংশ সিনিয়র তারকারাই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ইত্তেফাক

অথচ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এমনও একটা সময় গিয়েছে যখন আড্ডা আলাপেই কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য চেয়ার নির্বাচন করা হতো। নায়ক রাজ রাজ্জাকেরা যখন ছিলেন তখন এই ইন্ডাষ্ট্রি বছরে শত কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। এখন যুগ আধুনিক হয়েছে। সবকিছুর উত্তরণ হয়েছে। উত্তরণ ঘটেনি শুধু বাংলা চলচ্চিত্রের। বছরে ৩০ কোটি টাকারও লগ্নি হয়না এখন এই ইন্ডাষ্ট্রিতে। উল্টোদিকে তারকাদের চায়ের টেবিলে বা আড্ডায় কমিটি নির্বাচন তো অনেক দূরের কথা! নির্বাচন হবার পরও তা নিয়ে রেষারেষি, চেয়ার দখলের রাজনীতিতে উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

এই বেহাল দশায় অধিকাংশ ব্যস্ত শিল্পীরাই বিরক্ত। কারণ তারা সিনেমায় কাজ করতে চায়। ভাল গল্পের ছবি চায়। বছরে একাধিক ছবি রিলিজ চায়। তারা চায় একটা কাজের পরিবেশ বান্ধব এফডিসি।

এবছর মূলত নির্বাচনের পরে সাধারণ সম্পাদক পদটি চ্যালেঞ্জ করে আবার পূণর্গননা করা হলে দ্বিতীয় গননাতেও জায়েদ খান নিপুনের চেয়ে বেশি ভোটে এগিয়ে থাকে। এরপর একাধিক টিভি চ্যানেল ও গণমাধ্যমে ইলিয়াস কাঞ্চন মৌখিক ভাবে তার সেক্রেটারি হিসেবে জায়েদ খানকে মেনে নিয়ে আগামী পরিকল্পনার কথাও বলেন গণমাধ্যমকে। এমনকি চ্যানেল আইয়ের একটি অনুষ্ঠানে সভাপতি-সেক্রেটারি হিসেবে ফুলের মালা নিয়েও বরণ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও জায়েদ খান।

কিন্তু নির্বাচনের আপীল বিভাগের রায়ে এফডিসিতে বিচারের দিন জায়েদ খান অনুপস্হিত থাকায় ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ঠিক তার পরদিন শপথ অনুষ্ঠানে মিশা সওদাগর এসে শপথ পড়ান নতুন সভাপতিকে।যায়নুদ্দিন সানী: রকমারি খুব দুষ্টুঅধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন: বাংলাদেশ এগিয়েছে, তবে মানুষ এগোতে পারেনি!অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ: স্বাস্থ্যখাত : শত বিশৃঙ্খলার মধ্যেও বিপুল অর্জন

মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমাকে কাঞ্চন ভাই, জায়েদ দুজনই শপথ অনুষ্ঠানে আসতে বলেছে। সে কারণেই এসেছি। এরপর কেউ আইনি উদ্যোগ নিলে সেটা তার স্বাধীনতা। আমরা কেউই তো নিয়মের বাইরে নই।’

অপর দিকে জায়েদ খান বলেন, ‘আমি তো নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। এখন বারবার আমাকে হেনস্হা করা হচ্ছে। আর সেদিন আপীল বিভাগও তো অবৈধ। আর তারা এত তড়িঘড়ি করে রায় দেবার কি আছে। আমি হাজির থাকতে পারিনি। তাহলে কী তারা অপেক্ষা করতে পারতো না? একারণেই মাননীয় আদালতের দারস্হ হতে বাধ্য হয়েছি। কারণ আমি সত্যের পক্ষে লড়ছি। এখন আদালতের রায়ে আমার কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো বাধা নেই।’

এদিকে এরই ভেতরে একটি শপথ অনুষ্ঠিত হলেও সেই শপথে মিশা-জায়েদ প্যানেলের কেউই উপস্হিত ছিলেন না। তাই নতুন ভাবে ইলিয়াস কাঞ্চন-জায়েদ কমিটি সকলকে নিয়ে শপথ অনুষ্ঠিত হলে সেই শপথেও অপর প্যানেলের বিজয়ী প্রাথী‌র্রা উপস্হিত থাকবে কী না , তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।’

অন্যদিকে নিপুন জানিয়েছেন, তিনিও আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে সুপ্রীম কোর্টে যাবেন।

এই অবস্হায় সিনিয়র শিল্পীরা কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না এমন প্রশ্নে চিত্রনায়ক উজ্জ্বল জানান, ‘দেখুন সুপার সিনিয়র বলে একটা কথা আছে। সেখানে আমাদের মতো সুপার সিনিয়রদের মূলত কোনো বিশেষ পক্ষের হয়ে কথা বলা উচিত নয়। কিন্তু এবার নির্বাচনে সিনিয়ররা বিভিন্ন দলেই বিভক্ত হয়ে গেলেন। নয়তো এই সংকট নিপুন-জায়েদ দুজনকে একসাথে বসিয়ে এফডিসির ভেতরেই সমাধান করা সম্ভব। কারণ শিল্পী সমিতির নির্বাচন মূলত একটি আনন্দ আড্ডা। পিকনিকের মতো। সেখানে এতটা দ্বন্দ্বের অবস্হানে চলে যাবে। এটা আমরা ভাবতেই পারছিনা।’

তাই এই অচলাবস্হার সমাধান কবে কেউ জানে না। অনেকেই তাই মনে করছেন চলচ্চিত্রের সিনিয়র যারা রয়েছেন তারা উদ্যোগ নিয়ে নিপুন-জায়েদকে একসাথে বসিয়ে একটি সমাধানে আসতে পারে।

কিন্তু সে অনেকটা গুড়ে বালির মতো মনে করছেন অনেকে। তাদের পরস্পরের রেষারেষি দ্বন্দ্ব অনেকটা ব্যক্তিগত ইগোতে গিয়ে পৌঁছেছে। তাই সকলেই এখন এই দুজনার ভেতরে পরস্পরের একটি সমঝোতার দিকে চেয়ে রয়েছেন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *