২০০৮, টেস্ট অভিষেকে তামিম ইকবালের দুই ইনিংসে ফিফটি। নিউজিল্যান্ড সফরে সাদা পোশাকে দিয়েছিলেন দারুণ কিছুর বার্তা। ৬১ ম্যাচ খেলে গতকাল টেস্টে দেশের সর্বাধিক রানের মালিকও হয়েছিলেন তিনি। তবে সেই কৃতিত্ব এক ঘণ্টাও ধরে রাখতে পারেননি তামিম। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯ রানে আউট হন তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে মুশফিকুর রহীম তাকে টপকে নিজের জায়গা ফের দখল করে নেন। আরো একবার নিজের শহরে ব্যর্থ চট্টলার সন্তান তামিম। ঘরের মাঠে তার ক্যারিয়ারটা যেন বড্ড এলোমেলো! এখন পর্যন্ত সাগরিকায় ১৫ টেস্ট খেলেছেন।
সেখানে ১ সেঞ্চুরি ও পাঁচ ফিফটিতে তার সংগ্রহ ৯০৫ রান। চট্টগ্রামে তামিম প্রথম ম্যাচ খেলেন অভিষেকের বছরেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সেটি ছিল ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ। দুই ইনিংস মিলিয়ে করেছিলেন ২৩ রান। এখানে প্রথম ফিফটির দেখা পান ২০১০ এ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। তবে নিজ শহরের বাসিন্দাদের সেঞ্চুরি উপহার দিতে সময় নিয়েছেন ৬ বছর। ২০১৪ তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন ১০৯ রানের ইনিংস। অন্যদিকে ওয়ানডেতে তার এ মাঠে নেই কোনো শতরানের ইনিংস। হয়তো জন্মস্থানের চাপ বড় বেশি অসহায় করে তোলে দেশের সেরা এই ওপেনারকে!
গতকাল নিজের ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নামেন ৩ বছর ৩ দিন পর। এখানে শেষ খেলেছিলেন ২০১৮-এর জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। গতকাল মাঠে নেমে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মাত্র ১৫ বল ক্রিজে কাটান এই ওপেনার। ৯ রানের ইনিংসের সুবাদে ৪৪১৩ রানে থাকা মুশফিককে পেছনে ফেলেন। ৪৪১৪ রান নিয়ে টেস্টেও টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিকও হন তিনি। কিন্তু তার বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমে ৩৮ রান করে আউট হন মুশফিকুর রহীম। এতে ৪৪৫১ রান নিয়ে আবারো শীর্ষে ওঠেন মুশফিক। শুধু তাই নয়, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ রানের মালিকও মুশফিক। ১৭ ম্যাচ খেলে ৩০ ইনিংসে মুশফিকের সংগ্রহ ১১৭৬ রান। ১ সেঞ্চুরির পাশাপাশি খেলেছেন ফিফটি রানের ইনিংসও। তার পরেই আছেন চট্টগ্রাম বিভাগের আরেক সন্তান মুমিনুল হক সৌরভ। ১০ ম্যাচে ৬ সেঞ্চুৃরি ও এক ফিফটিতে ১০৮২ রানের মালিক তিনি। তৃতীয় স্থানে তামিম। ৫৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে ৩৯০১ রান সংগ্রহ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। সাগরিকাতে ১৭ ম্যাচে ৮৩৪ রান করে চতুর্থ স্থানে আছেন তিনি। গতকাল ব্যাট হাতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম দিনে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব।
টেস্ট ক্যারিয়ারে তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৯টি সেঞ্চুরি। তার একটিমাত্র সাগরিকাতে। এই মাঠে দুই ইনিংস মিলিয়ে প্রথম শত রানের দেখা পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০-এ। এখানে দুই ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৭৬ রান আসে ২০১৪ তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেবারই এখানে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন। শুধু টেস্টেই নয় তামিম ওয়ানডেতে নিজ শহরে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ১৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যেখানে কোনো সেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ ইনিংস ৯৫ রানের।