নবী ও রাসুলকে কখনো তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয় না

নাবুওয়াত ও রিসালাত আল্লাহপাকের দেয়া এমন একটি নেয়ামত ও পদমর্যাদা, যা থেকে তাদেরকে কখনো বরখাস্ত করা হয় না। বিমুখ করা হয় না। তাঁদের জন্মই হয় নবী ও রাসুল হিসেবে এবং মৃত্যুর পরও তারা নবী ও রাসূলরূপে গণ্য থাকেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সর্ব বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী বিধায় এমন কাউকে নাবুওয়াত ও সিরালাতের পদ দান করেন না, যাকে ভবিষ্যতে বরখাস্ত করতে হয়।

[৩]আর এ কথাও স্বতঃসিদ্ধ যে, প্রত্যেক নবী ও রাসুলের প্রতি ওহী প্রেরণ করা হয়েছে। এতদপ্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : (ক) তোমার পূর্বে আমি পুরুষই নবী-রাসূল রূপে প্রেরণ করেছিলাম। যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠাতাম। সুতরাং তোমরা জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস করো। যদি তোমরা না জান। আর আমি তাদের এমন দেহ বিশিষ্ট করিনি যে, তারা খাদ্য গ্রহণ করত না, আর তারা চিরস্থায়ীও ছিল না। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৭-৮)।

(খ) হে আমাদের পরওয়ারদিগার! তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন; যিনি তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দিবেন, আর তাদেরকে পবিত্র করবেন। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১২৯)। শুধু তা-ই নয়, মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত নবী ও রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্যটুকু খোলাখুলিভাবে আল কোরআনে বিবৃত করেছেন। আল কোরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন : তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি এটাকে সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করতে পারেন। এবং সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা ফাত্হ : আয়াত ২৮)।
[১] ডিএনসিসির ৭ স্থানে করোনা পরীক্ষা ≣ পাকিস্তানে খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় কূটনীতির পরাজয় হয়নি, বললেন বিসিবি সভাপতি ≣ [১] এখন থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিবে বিসিক

বস্তুত : নবী ও রাসূলদের কাজ হলো নাবুওয়াত ও রিসালাতের দায়িত্বকে মানুষের সামনে তুলে ধরা। নবী ও রাসূলগণ পুরোপুরি এই দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তাঁরা মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল ছিলেন। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : (ক) হে রাসুুল! তোমার প্রতিপালকের পক্ষহতে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা তুমি পৌঁছে দাও, আর যদি তুমি তা না করো, তবে তুমি তাঁর রিসালত পৌঁছালে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত ৬৭)।

মহান আল্লাহ তায়ালা প্রথম মানব ও নবী হযরত আদম (আ.) হতে আরম্ভ করে আখেরী নবী ও রাসুল হযরত মোহাম্মাদ মুস্তাফা আহমাদ মুজতাবা (সা.) পর্যন্ত যে সকল নবী ও রাসুল দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন তাদের একই দায়িত্ব ছিল। যেমন আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : আর আমি অবশ্যই প্রত্যেক জাতিতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং পরিহার করো তাগুত (শয়তান-কে)। তাদের মধ্যে হতে আল্লাহপাক কাউকে হিদায়াত দিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে থেকে কারোও উপর পথভ্রষ্টতা সাব্যস্ত হয়েছে। সুতরাং তোমরা যমীনে বিচরণ করো, অতঃপর দেখ, অস্বীকারকারীদের পরিণতি কিরূপ হয়েছে। (সূরা নাহল : আয়াত ৩৬)।

মোটকথা, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের বক্তব্য হলো নবী ও রাসুলগণ ওহী লাভ করার পূর্বেও নবী। অনুরূপভাবে পৃথিবীর জীবন সমাপ্তি লাভের পরও তাঁরা নবী ও রাসুল। তারা সদা সর্বদা মাসুম বা নিষ্পাপ। এর প্রমাণ হচ্ছে হযরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে আল কোরআনের বাণী। মাতৃক্রোড়ে শৈশবকালে ঈসা (আ.) নাবুওয়াতের ঘোষণা দিয়েছেন এবং আল্লাহপাক তা সত্যায়ন করেছেন। তিনি বলেছেন : ‘আমি আল্লাহর একজন বান্দাহ। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং নবী করেছেন’। তবে, শুধু শিশু বা বালক বলে পরিচিত কারো কাছে কিতাব বা ওহী আসে না, যতক্ষণ না তিনি নবী ও রাসুল হিসেবে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত হন। উপরোক্ত আয়াতে কারীমার অর্থ ও মর্ম এতই সুস্পষ্ট যে, এর কোনো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজন আদৌ নেই। যে বা যারা এ বাণী বা হুকুমকে অবিশ্বাস করবে, সে অবশ্যই কাফির হয়ে যাবে। (আবু শাকুর সালেমী : তামহীদ-পৃষ্ঠা ৭৩)।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *