টঙ্গীতে কারখানা বন্ধের নোটিসে শ্রমিক বিক্ষোভ

গাজীপুরের টঙ্গীর বিসিক এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় বন্ধের নোটিস দেয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশপাশের আরো কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা একসঙ্গে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিসিক এলাকার চারটি পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর চালায়। পরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনটি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও ছয় রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ১০ শ্রমিকসহ পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুিমশ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৯ জানুয়ারি টঙ্গীর বিসিক এলাকায় অবস্থিত টিভলি অ্যাপারেলস লিমিটেডের ফিনিশিং সহকারী রিপা আক্তারকে লাঞ্ছিত করেন কারখানার পঞ্চম তলার উৎপাদন ব্যবস্থাপক লুত্ফর রহমান। এ সময় রিপাকে ধাক্কা দিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন লুত্ফর। বিষয়টি কারখানার অন্য শ্রমিকদের মধ্যে জানাজানি হলে ওইদিনই বিচারের দাবিতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন। পরে শ্রমিকরা ১২ দফা দাবি মালিকপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেন। পরে তারা কাজে যোগদান না করে চলে যান। এতে কর্তৃপক্ষ গতকাল সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণার নোটিস টানিয়ে দেয়। গতকাল সকালে শ্রমিকরা কারখানা বন্ধের নোটিস দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা পাশের রেডিসন গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার সামনে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও ওই কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দিতে বলেন। এতে পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আরবিএসআর ফ্যাশন লিমিটেড এবং বিসিক ফকির মার্কেটে জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। পরে পুলিশ ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও ছয় রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আরবিএসআর ফ্যাশন লিমিটেড ও রেডিসন অ্যাপারেলস লিমিটেড ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

টিভলি অ্যাপারেলস লিমিটেডের মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, নারী শ্রমিকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে ঘটনার দিনই উৎপাদন ব্যবস্থাপককে অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা তা সত্ত্বেও কিছু অযৌক্তিক দাবি পেশ করেন, যা শ্রম আইনের পরিপন্থী। তাই কারখানা বন্ধের নোটিস দেয়া হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) জানান, টিভলি অ্যাপারেলসের শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে অন্যান্য কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালান। এতে পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *