জিহ্বা যখন জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি কি তার জন্য দুটি চোখ, একটি জিহ্বা এবং দুটি ঠোঁট সৃষ্টি করিনি?’ (সুরা : বালাদ, আয়াত : ৮-৯)

আমাদের প্রতিপালক আমাদের যে অসংখ্য নিয়ামত ও অনুগ্রহ দান করেছেন এর মধ্যে জিহ্বা অন্যতম। জিহ্বার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমেই আমাদের বুদ্ধি-বিবেচনা, ভালো-মন্দ এবং রুচি-অভিরুচির আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটে। পক্ষান্তরে বহুমূল্য এ নিয়ামতের ভুল ব্যবহার আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ করে ফেলে এবং আমাদের প্রতিবেশীরাও এতে আন্তরিকভাবে আহত হয়।

জনৈক আরবি কবির কবিতা, ‘তরবারির আঘাতের মলম ও প্রতিষেধক আছে, কিন্তু জিহ্বার আক্রমণের প্রতিষেধক নেই।’
[১] অন্তবর্তীকালীন সিইও নিয়োগ দিল বিসিসিআই ≣ [১] রাজধানীতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান ≣ করোনো ভাইরাস : ১৯ দেশে হাই অ্যালার্ট, মৃত ১৭০, আক্রান্ত ৭ হাজার

জিহ্বার মাধ্যমেই আমরা বড় বড় ভুল করে থাকি। এ জন্য বুদ্ধিমানরা বুঝেশুনে সঠিক পদ্ধতিতে জিহ্বার ব্যবহার করে। জিহ্বার ভুল ও অসঠিক ব্যবহার পরিহার করে উত্তম পদ্ধতিতে তা ব্যবহারকেই ‘জিহ্বার হেফাজত ও নিয়ন্ত্রণ’ আখ্যায়িত করা হয়। ইসলামী শরিয়তে জিহ্বার নিয়ন্ত্রণ ও হেফাজতের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, এক ব্যক্তি নিজের জিহ্বা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক ও সহানুভূতি অর্জনমূলক কথা বলত, কিন্তু এসব ভালো কথার গুরুত্ব সম্পর্কে সে ছিল বেখবর। এ পরিস্থিতিতেও আল্লাহ তার অজান্তেই তার উত্তম কথার দরুন তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। অন্যদিকে আরেকজন লোক আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন সব কথা বলত, অথচ সেদিকে তার কোনো খবরই ছিল না। আল্লাহ তাআলা এ লোককেও তার অজান্তেই জাহান্নামে নিক্ষেপ করেন। (সহিহ বুখারি)

সব সময় আমাদের বুঝেশুনে কথা বলা উচিত। এর বিপরীতে অকারণে অতিরিক্ত কথা বলায় সমাজে আমাদের ব্যক্তিত্বের অবনতি ও অবক্ষয় হয়। জ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী তো সে যে চিন্তাভাবনা করে ও বুঝেশুনে জিহ্বার ব্যবহার করে। যেখানে সে জানবে যে এখানে তার কথা অমূল্যায়িত হবে সেখানে সে চুপ থাকবে। কেননা মুখ ফসকে বের হওয়া কথা এবং ধনুক থেকে ছুটে যাওয়া তীর কখনোই ফিরিয়ে আনা যায় না। তাই কথা বলার পর আফসোসের পরিবর্তে আগে থেকেই চুপ থাকা শ্রেয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর ঈমান রাখে সে সর্বদা শুধু ভালো কথা বলবে, নয়তো চুপ থাকবে। (বুখারি ও মুসলিম)

ঈমানদার ও বিশ্বাসীর কথাবার্তা সব সময় উত্তম এবং একই সঙ্গে প্রভাবপূর্ণ হয়। সে অনর্থক কথা ও কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখে। মহানবী (সা.) বলেছেন, অনর্থক কথাবার্তা পরিহার করা মানুষ উন্নত ইসলামের প্রমাণ। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক)

আবু মুসা (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! মুসলমানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে? তখন তিনি উত্তর দিলেন, যার হাত ও মুখ থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। (বুখারি)

মহানবী (সা.) আরো বলেন, যে আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (জিহ্বা) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী (লজ্জা) স্থানের জামানত দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জামিন হব। (বুখারি)। মহান আল্লাহ আমাদের জিহ্বা ও মুখ নিয়ন্ত্রণের তাওফিক দান করুন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *