খালেদা জিয়ার ‘কারাবন্দি দিবস’, রাজধানীতে সোমবার সমাবেশ করবে বিএনপি

বর্তমানে কারাগারের বাইরে থাকলেও সোমবার তৃতীয়বারের মতো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘কারাবন্দি দিবস’ পালন করবে বিএনপি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ বছরের সাজা হয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়া এখনও মুক্ত নন, তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। পার্থক্য এটুকুই যে, তিনি ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে পারছেন। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো নয়।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, সরকার যে উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি দিয়েছিল, তা সফল হয়নি। কারণ, করোনাজনিত পরিস্থিতিতে অন্য কোনো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ হয়নি। সরকারের উচিত, খালেদা জিয়ার সম্মতি সাপেক্ষে তার সুষ্ঠু চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে রাজি হওয়া। তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী কোনো সাজার কার্যকারিতা শর্তহীনভাবে স্থগিত করার ক্ষমতা পুরোপুরি সরকারের হাতে। আমরা চাই তার শর্তহীন মুক্তি।
চট্টগ্রাম মেয়র মনোনয়নে কারো কথা শুনলেন না অনমনীয় হাসিনা, বেছে নিলেন দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা রেজাউলকে ≣ [১] শেখ কামালকে নিয়ে ফেসবুকে কটুক্তি, শৈলকুপায় যুবক গ্রেপ্তার ≣ [১] দুই বছর ধরে কিম কার্দাশিয়ানকে ডিভোর্সের চেষ্টা করছেন কানিয়ে

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে তিন বছর ধরে বন্দি করা হয়েছে। গত মার্চে কারাগার থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হলেও তিনি মূলত গৃহবন্দি।

খালেদা জিয়ার ‘কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে আজ ঢাকাসহ সারাদেশের সব জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। রাজধানীতে এ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় সমাবেশের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফার মুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবারও খুব শিগগির আবেদন করা হবে। বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে যথাসময়ে অবশ্যই এ আবেদন করা হবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে খালেদা জিয়া প্রথমে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে প্রায় ১১ মাস চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় খালেদা জিয়ার ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়।

মুক্তির শর্ত দুটি হলো- তিনি নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। পরে দ্বিতীয় দফায় তার সাজার স্থগিতাদেশ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় দফায় মুক্তির ক্ষেত্রেও আগের শর্তগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে।

বর্তমানে খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের বাসা ‘ফিরোজা’য় আছেন। তার চিকিৎসার সবকিছু লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধান করছেন। তার সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন অবস্থান করছেন। প্রায় প্রতিদিনই ভাই-বোন দেখতে যান তাকে। এ সময় তারা এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাটান।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া নামাজ, বই ও পত্রিকা পড়ে, টেলিভিশন দেখে এবং দেশে-বিদেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে সময় কাটাচ্ছেন। তার অবস্থার কোনো উন্নতি নেই।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *