কৃষকদের সহায়তামূলক কর্মসূচির আওতায় ২৫০ কোটি ডলার বা ১৮ হাজার কোটি রুপি ছাড়লেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ভারতের কৃষকরা কয়েক সপ্তাহ ধরে যখন দিল্লি অবস্থান করছেন, তখন এ সহায়তার ঘোষণা দিলেন তিনি। খবর ব্লুমবার্গ। বড়দিনের ছুটিতে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ২ হাজার রুপি করে পাঠালেন মোদি। শুক্রবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে দেশের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। ওড়িশা, অরুণাচলসহ দেশের একাধিক রাজ্যের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন মোদি।
আলোচনার শুরুতেই তিনি ঘোষণা করেন, দেশের নয় কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে ২ হাজার রুপি করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবে। এ প্রকল্পে সরকারের প্রায় ১৮ হাজার কোটি রুপি খরচ হচ্ছে। বৈঠকে উঠে আসে সেই অটলবিহারী বাজপেয়ির আমল থেকেই কৃষিতে কীভাবে জোর দিয়ে আসছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।
সরকারের সহযোগিতা কর্মসূচির আওতায় তিন কিস্তিতে ৬ হাজার রুপি করে পাচ্ছেন কৃষকরা। শুক্রবার সর্বশেষ কিস্তি পৌঁছল কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। চলতি বছর কৃষকদের জন্য এ কর্মসূচিতে ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন রুপি ব্যয় করছে বিজেপি সরকার। সরকার কৃষকদের কথা ভাবে—এ দাবি প্রধানমন্ত্রী মোদির। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, একদল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে ফসলের চুক্তির সঙ্গে জমি নিয়েও চুক্তি হয়ে যাচ্ছে এবং কৃষকরা একসময় তাদের জমি হারিয়ে ফেলবেন, সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে বিরোধীদের উদ্দেশে মোদির বার্তা, কৃষকদের উল্টোপাল্টা বোঝাবেন না। এসব দল ও আগের সরকারের জন্য কৃষিতে উন্নতি হয়নি। গরিব কৃষক এদের জন্য আরো গরিব হয়েছে। ২০১৪ থেকে আমরা নতুন রণকৌশল নিয়ে কাজ করছি। যৎসামান্য প্রিমিয়ামে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমার সুবিধা দিয়েছেন চাষীদের। ৮৭ হাজার কোটি রুপির বীমা পেয়েছেন চাষীরা।
মোদি আরো বলেন, আজ কৃষকরা পেয়েছেন পাকা ঘর, শৌচালয়। দিনে ৯০ পয়সায় ৬০ বছরে মিলবে ৩ হাজারের মাসিক পেনশন। ছোট কৃষকরা আরো সহজে ব্যাংক থেকে পাচ্ছেন ঋণ।
রাজনীতি ও আবেগের জায়গা থেকে ভারতে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। দেশটির ১৩০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৮০ কোটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশটির মোট জিডিপির ১৬ শতাংশ আসে এ খাত থেকে।
নতুন কৃষি আইন নিয়ে মোদি বলেন, কৃষকরা যার কাছে ইচ্ছে তার কাছে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে পারবেন। যেখানে ন্যায্যমূল্য পাবেন, সেখানেই তারা বিক্রি করতে পারেন। অবশ্য আন্দোলনরত কৃষকরা বলছেন, আইনটি বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ আইনে তাদের আয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বড় করপোরেশনের কাছে তারা অসহায় হয়ে পড়বেন বলে শঙ্কা তাদের।