চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি যখন দুই ভাগে বিভক্ত। একে অন্যের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। রূপালী পর্দার সফল জুটি ও একই সিনেমায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত ইলিয়াস কাঞ্চন ও অঞ্জনা নির্বাচন করলেন দুজন দুই প্যানেল থেকে। এই জুটি বিজয় মুকুট ধারণ করলেন শিল্পী পরিবারের ভালোবাসায়। কাঞ্চন ও অঞ্জনা দু’জনই ব্যক্তি জীবনে বিনয়ী, অমায়িক ও মানবিকও বটে। শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন কাঞ্চন-অঞ্জনার হ্যান্ডসেক করার একটি স্থিরচিত্র নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। শুধু ভাইরালই নয়, বিনোদন দুনিয়ায় দর্শকদের মাঝে সম্মানের জায়গায় আসীন হয়েছেন তারা। নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
কেমন লাগছে? অঞ্জনা বলেন, খুব ভালো লাগছে।
শিল্পীরা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সভাপতি হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন নির্বাচিত হয়েছেন। এটাও ভালো লাগার ব্যাপার। কেমন মনে হলো এবারের নির্বাচন? এ অভিনেত্রী বলেন, রূপালী পর্দায় উপস্থিতি সাধারণত সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার হয়। কিন্তু শিল্পীদের পারিবারিক বিচরণ হয় সব সময়ের। কাজেই পারিবারিক জীবনে আমরা বেশি সময় কাটাই। পর্দার বাইরে সব শিল্পীরা পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ। অঞ্জনা আরও বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন শুধু আমার পর্দার নায়ক নয়, তারচেয়ে বেশি সে আমার ভাই ও বন্ধু। ‘পরিণীতা’ সিনেমায় আমাদের দু’জনার অভিনয় সিনেমাবোদ্ধারা এতই পছন্দ করেছিলেন সেই সময় যা বলাই বাহুল্য।
ইলিয়াস কাঞ্চনকে দীর্ঘ দিন ধরে চেনেন। তিনি শিল্পী সমিতির সভাপতি হলেন। কি মনে হচ্ছে? অঞ্জনা বলেন, তিনি চমৎকার মানুষ। কাঞ্চন ভাই অনেক ধর্মভীরু, স্বল্পভাষী, সজ্জনব্যক্তি। অভিনয়ের বাইরে তিনি ক্লাব-পার্টি একদম পছন্দ করেন না। তার প্রয়াত স্ত্রী জাহানারার প্রতি যে তার ভালোবাসা তা সত্যিই খুবই বিরল। নির্বাচন একটি চলমান প্রক্রিয়া মাত্র। কিন্তু একজন শিল্পীর শিল্প-সত্তা চিরকাল চলমান। শারীরিক মৃত্যু হয় কিন্তু একজন শিল্পী তার কর্মের মধ্যদিয়ে মানুষের হৃদয়ে চির অমর হয়ে রয়ে যায়। কাঞ্চন ভাই চলচ্চিত্র নায়ক হিসেবে খুব অল্প বয়সে সরকারের দেয়া সম্মানজনক একুশে পদক অর্জন করেছেন। নিরাপদ সড়ক চাই এর মতো আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি জনতার বাস্তবের নায়ক হয়েছেন আগেই।
এবার শিল্পী সমিতিও তিনি খুব ভালো ভাবে সামলাবেন, এটা আমাদের সবার বিশ্বাস। শিল্পী সমিতির এবারের নেতৃত্ব নিয়ে প্রত্যাশা কি? অঞ্জনার উত্তর- সম্মানিত ভোটাররা নারী শিল্পীদের ভালোবেসে ভোট প্রদান করেছেন। তারা শিল্পীদের প্রতি ভালোবাসার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখালেন। এবার দুই নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ও জায়েদ খান আশা রাখি সবার সহযোগিতা নিয়ে অতীতের সব ভুলত্রুটি, বিভাজন ভুলে উন্নয়নমূলক কাজ করে শিল্পী সমিতিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন। শিল্পী পরিবারের সবার প্রতি আমার অনুরোধ কাউকে ছোট করবেন না। কাউকে ছোট করে কেউ বড় হতে পারে না। যা ভালো সেটাকে অবশ্যই ভালো বলুন, মন্দকে অবশ্যই না বলুন। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে সমিতির ওপর চাপিয়ে দিবেন না।