করোনায় উভয় সংকটে ঝিনাইদহের খামারিরা

একদিকে সরবরাহ সংকটে গো খাদ্যের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে চাহিদা কমে আসায় কমছে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এমন উভয় সংকটে পড়েছে ঝিনাইদহের গো খামারীরা। তাদের আশঙ্কা, এ সংকট আরো দীর্ঘস্থায়ী হলে তাদের পথে বসতে হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঝিনাইদহে ছোট-বড় প্রায় ৫০ হাজার দুগ্ধ খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রতিদিন দুধ উৎপাদন হয় ২৮৪ টন। করোনার কারণে দুধের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। মূলত এ কারণেই খামারীরা সংকটে পড়েছেন।

সদর উপজেলার ধনঞ্জয়পুর গ্রামে ২০১৪ সালে ৪ একর জমির উপর এম আর এইচ এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামের গবাদি পশুর একটি খামার তৈরী করেন রোকনুজ্জামান রিপন। নিজস্ব অর্থায়নে ৭টি গাভী নিয়ে খামারে দুধ উৎপাদন শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার খামারে ৪২ টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ২২টি গাভী, যা থেকে প্রতিদিন ১২০ লিটার দুধ পাওয়া যায়।

রোকনুজ্জামান রিপন বলেন, তরল দুধ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ও হোটেলসহ আমাদের প্রধান ক্রেতারা দুধ কিনছে না। এতে পানির দামে স্থানীয় গ্রাহকদের কাছে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে পরিবহন সংকটে গো খাদ্যের দাম বেড়েই চলেছে। গাভীকে পর্যাপ্ত খাদ্য দিতে না পারায় দুধের উৎপাদনও কমে গেছে।

তিনি জানান, তার খামারে ৫ জন শ্রমিক কাজ করে। তাদের পারিশ্রমিক দেয়া এবং গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সুদ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে, অচিরেই পথে বসতে হবে।

তবে শুধু রোকনুজ্জামান রিপন জেলার অন্যান্য খামারীদেরও একই কথা অবস্থা। তারা বলেন, দুধ বিক্রি থেকে আয় দিয়ে লাভ দূরে থাক খামার রক্ষণাবেক্ষণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক কথায়, এখন আমরা পুরো লোকসানে আছি। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি প্রণোদনাসহ ঋণের সুদ মওকুফের দাবি তাদের।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনন্দ কুমার অধিকারি বলেন, করোনায় খামারীদের লোকসানের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনাসহ খামারীরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবে বলে আশা করছি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *