কঠিন ‘১৪’ দিন শেষে আজ মুক্ত টাইগাররা

ক্রাইস্টচার্চে পা রেখে প্রথম ২৪ ঘণ্টা রুমে বন্দি ছিলেন ক্রিকেটাররা। এরপর দিনে মাত্র ৩০ মিনিট খোলা হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন টানা পাঁচদিন। সেই সময় তিন দফায় করোনার নমুনা দিয়ে নেগেটিভ হয়েছে বাংলাদেশ দল। তাতে পরের সাতদিন সুযোগ পেয়েছে দিনে দুই ঘণ্টা করে ছোট ছোট গ্রুপে অনুশীলন করার। অবশেষে নিউজিল্যান্ডে টাইগারদের ১৪ দিনের কঠিন কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে আজ। গতকাল চতুর্থবার করোনা পরীক্ষাতেও সবাই পাস করে। তাই দেশটির সরকারের করোনা নীতি অনুসারে বাংলাদেশ দলের বাইরে যেতে আর কোনো বাধা নেই। দলের শৃঙ্খলা মেনে ক্রিকেটার থেকে কোচিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টের সকলেই বাইরে যেতে পারবেন প্রয়োজনে।
সফররত ২০ সদস্যের দলের এক সঙ্গে অনুশীলনেও কোনো বাধা নেই। তাই সবকিছু ঠিক থাকলে আজই সন্ধ্যায় কুইন্সটাউনের বিমান ধরবে টাইগাররা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মেডিকেল বিভাগের প্রধান দেবাশিষ চৌধুরী। মুঠোফোনে দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘কাল (আজ) দুপুরে আমাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে। চতুর্থবার যে আমাদের করোনা নমুনা নেয়া হয়েছিল সেখানে সবারই ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। এই দেশের করোনা আইন অনুসারে আমাদের কাল থেকে আর দলবদ্ধভাবে কার্যক্রম চালাতে বা বাইরে যেতে কোনো ধরনের বাধা নেই। আমরা ক্রাইস্টচার্চ ছেড়ে কুইন্স টাউনে যাবো।’ এখানেই দলের সঙ্গে যোগ দিবেন স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরিও। ২০ মার্চ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ ডানেডিনে। তার আগে কুইন্সটাউনে বাংলাদেশ অনুশীলন করবে টানা পাঁচদিন। শেষ সাতদিনও অনুশীলন করছে, জিম করেছে। কিন্তু সেখানে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে করতে হয়েছে। কিন্তু কুইন্সটাউনে অনুশীলন হবে দলের সবাইকে নিয়ে। এই বিষয়ে দেবাশিষ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কাল থেকে কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার পর এক সঙ্গে অনুশীলন আয়োজন করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না। এইখানে (নিউজিল্যান্ডে) নিয়মটাই এমন। এখন থেকে দলের যে কোনো ক্রিকেটার বা স্টাফ প্রয়োজনে বাইরেও যেতে পারবেন। আমরা কুইন্সটাউনে অনুশীলন ক্যাম্প করবো। সেখান থেকে ১৬ই মার্চ চলে যাবো ডাডেডিনে মূল ভেন্যু প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে। আমাদের সূচি অনুসারে যেভাবে ভ্রমণ থাকবে সেই ভাবেই চলবে। নিউজিল্যান্ড সরকারের নিয়ম অনুসারে ১৪ দিন পর আর ঘুরে বেড়াতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু বাংলাদেশ সহ এশিয়ার সর্বত্র ক্রিকেটার পুরো আসর জুড়েই থাকতে হয় বায়ো বাবোলের মধ্যে। বাইরে মানুষের সংস্পর্শে গেলেই থাকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। কিন্তু নিউজল্যান্ডে কোয়ারেন্টিন শেষে ঘুরে বেড়ালে আর কোনো করোনার ঝুঁকি নেই বলেই জানিয়েছেন বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসক। সব শেষ গেলবছর অক্টোবরে শ্রীলঙ্কা ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিনের শর্ত মেনে নেয়নি বিসিবি। যে কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপের সিরিজটি স্থগিত হয়ে যায়। এমন শর্ত না মানার কারণ ছিল ১৪ দিনের বন্দিদশায় ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতি হতে পারে। তবে নিউজিল্যান্ডে অবশ্য একই শর্ত মানলেও টাইগারদের অভিজ্ঞতা একেবারেই ভিন্ন। এই বিষয়ে বিসিবি’র চিকিৎসক বলেন, ‘দেখেন এখানে ১৪ দিন যে এমনভাবে কাটাতে হবে তার জন্য দলের ক্রিকেটাররা আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিল। যে কারণে প্রথম ৭ দিন একটু বেশি কষ্ট হলেও এরপর থেকে তারা পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। শেষ এক সপ্তাহেতো জিম করেছে, অনুশীলন করতে পেরেছে। এতে করে এখন ওরা বেশ ভালো আছে। এমনকি শারীরিক কোনো ইনজুরিও নেই। যা অনুশীলন করেছে তাতে ওরা সবাই ফিট আছে।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *