এবার নৌ-উত্তেজনার বিষয়ে সতর্কবার্তা উত্তর কোরিয়ার

উত্তর কোরিয়ার সেনাসদস্যদের গুলিতে নিহত দক্ষিণ কোরিয়ার মৎস্য বিভাগের এক কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধারে খোঁজ জারি রেখেছে পিয়ংইয়ং। কিন্তু একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়া সতর্ক করেছে, বিতর্কিত জলসীমায় দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর অভিযান অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে। এর আগে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন তার সেনাবাহিনীর সদস্যদের গুলিতে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তার মৃত্যুতে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিমের জন্য এ ধরনের ক্ষমা প্রার্থনা একেবারেই বিরল ঘটনা। খবর রয়টার্স ও এএফপি।

উত্তর কোরিয়ার সেনারা গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার ওই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করে। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, নিহত ব্যক্তির মরদেহে সমুদ্রসীমার কাছে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর রোববার উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জা-ইন তাম মন্ত্রীদের বৈঠক ডাকেন। একই সঙ্গে দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ব্লু হাউজ পিয়ংইয়ংয়ের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের যৌথ অনুসন্ধানের আহ্বান জানায়। এছাড়া চলতি বছর উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়ার ছিন্ন করে দেয়া সামরিক যোগাযোগের হটলাইন পুনঃপ্রতিষ্ঠার অনুরোধ করা হয়।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ওই হত্যাকাণ্ড একটি ঘৃণিত কাজ। এ ধরনের ঘটনা মোটেই ঘটনা উচিত ছিল না। কিন্তু একই সঙ্গে কেসিএনএ অভিযোগ করা হয়, উত্তর কোরিয়ার জলসীমার কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার নৌ-অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আর এ সীমানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেসিএনএ বলে, পশ্চিম সমুদ্রে সামরিক সীমানা অতিক্রম না করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে অনুরোধ করা হচ্ছে। তারা যেন অবিলম্বে ওই অঞ্চলে তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করে। না হলে এখানে নৌ-উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। তবে উত্তর কোরিয়ার এ অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া শুধু দক্ষিণে উত্তর সীমারেখার জলসীমায় অনুসন্ধান পরিচালনা করছে। তবে এ সীমানা নিয়ে উভয় কোরিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধ চলে আসছে ১৯৫০-১৯৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর থেকেই। আর দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ অনুসন্ধান বিষয়ে এ তথ্য দিয়েছে দেশটির কোস্টগার্ডের এক সদস্যের বরাতে। দক্ষিণ কোরিয়া এ অনুসন্ধান কাজে ৩৯টি নৌযান ব্যবহার করছে। এর মধ্যে নৌবাহিনীর জাহাজ রয়েছে ১৬টি। এছাড়া অনুসন্ধান কাজে ছয়টি উড়োজাহাজও ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিকে কেসিএনএ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া মরদেহ উদ্ধারের জন্য নিজের মতো করেই অভিযান শুরু করেছিল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আমরা উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যাতে সম্পর্কের আরো অবনতি না হয় সে বিষয়ে সচেষ্ট। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য আরো নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এর মধ্য দিয়ে সামনের দিনে শান্তি বজায় থাকবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *