ইতিহাসের পাতায় মায়ার্সের ডাবল

কাইল মায়ার্স ও এনক্রুমা বনারের জুটি জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ইতিহাস গড়া ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়েছেন কাইল মায়ার্স। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৯ গড়ের এই ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন ২১০ রানে। এটি অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি।
প্রথম সারির ক্রিকেটাররা থাকলে হয়তো টেস্ট দলে সুযোগই পেতেন না কাইল মায়ার্স। পরিস্থিতি তাকে করে দিয়েছে সুযোগ। সে সুযোগ তিনি লুফে নিলেন দারুণ ভাবে। ২৮ বছর বয়সী এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার অভিষেক রাঙালেন ডাবল সেঞ্চুরিতে। আরেক অভিষিক্ত এনক্রুমা বনারের সঙ্গে তার জুটিও জায়গা করে নিয়েছে রেকর্ড বইয়ে।
দ্বিতীয় সেশনে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মায়ার্স শতরানে পা রাখেন ১৭৮ বল খেলে। অভিষেকে সেঞ্চুরি করা চতুদর্শ ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার মায়ার্স। সবমিলিয়ে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি ১০৯টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এই স্বাদ সবশেষ পেয়েছিলেন কার্ক এডওয়ার্ডস, ২০১১ সালে ভারতের বিপক্ষে ডমিনিকায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেকে সেঞ্চুরি মায়ার্সের আগে করতে পেরেছেন কেবল ৩ জন। ২০০১ সালে মুলতানে করেছিলেন পাকিস্তানের তৌফিক উমর, ২০০৩ সালে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক রুডলফ ও একই বছর করাচিতে পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ সেঞ্চুরি করেছিলেন দুই ইনিংসেই। এরমধ্যে রুডলফ সেঞ্চুরিকে ডাবলে পরিণত করেছিলেন।
অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি মায়ার্সের আগে টেস্ট ইতিহাসেই করতে পেরেছেন কেবল ৭ জন। সবশেষ ২০১২ সালে অ্যাডিলেইডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ দু প্লেসি। তবে চতুর্থ ইনিংসে ডাবল করা একমাত্র ক্রিকেটার মায়ার্স। এর আগে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিলো ভারতের আব্বাস আলী বেগের ১১২। অভিষেকে আগে ডাবল ছিলো মাত্র পাঁচ জনের। গতকাল ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সে তালিকায় ঢুকলেন মায়ার্স।
ছয় জনের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন এই ক্যারিবীয়ান। এর আগে চট্টগ্রামেই বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক রুডলফ।
অভিষিক্ত দুই ব্যাটসম্যান মায়ার্স ও বনারের জুটি ২১৬ রানের। টেস্ট ইতিহাসের দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ। চতুর্থ ইনিংসে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সেরা জুটি এটিই। ১৯৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করাচিতে পাকিস্তানের খালিদ ইবাদুল্লাহ ও আব্দুল কাদির গড়েছিলেন ২৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬৫ রানের জুটি এতদিন ছিল জিম্বাবুয়ের ডেভ হটন ও অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের, ১৬৫। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের আগের সর্বোচ্চ জুটি ছিল ১৯৩০ সালে জর্জ হ্যাডলি ও ফ্রাঙ্ক ডি কেয়ার্সের ১২৪। চতুর্থ ইনিংসে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের জুটিতে অবশ্য টেস্ট ইতিহাসেই সেরা মায়ার্স ও বনার। আগের সেরা ১৩৪ রানের জুটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে, ২০০৩ সালে পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ ও ইয়াসির হামিদের।

অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি
নাম রান ৪/৬ প্রতিপক্ষ সাল
ফস্টার (ইংল্যান্ড) ২৮৭ ৩৭/০ অস্ট্রেলিয়া ১৯০৩
লরেন্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ২১৪ ১৯/১ নিউজিল্যান্ড ১৯৭২
কুরুপ্পু (শ্রীলঙ্কা ) ২০১* ২৪/০ নিউজিল্যান্ড ১৯৮৭
ম্যাথু সিনক্লিয়ার (নিউজিল্যান্ড) ২১৪ ২২/০ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৯৯
জ্যাক রুডলফ (দ. আফ্রিকা) ২২২* ২৯/২ বাংলাদেশ ২০০৩
মায়ার্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ২১০* ২০/৭ বাংলাদেশ ২০২১

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *