অফিসে এসে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই —টিম কুক

কভিড-১৯ মহামারীতে বিভিন্ন দেশ লকডাউন ঘোষণা করায় কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ করে দিয়েছিল বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো আবারো কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের স্থায়ীভাবে বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ দিলেও প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল সে পথে হাঁটছে না। প্রতিষ্ঠানটি একটি ভার্চুয়াল সভায় কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা জানিয়েছে। তবে আগামী জুনের আগে বেশির ভাগ কর্মীকে অফিসে ফিরতে হবে না বলেও জানানো হয়েছে। খবর ব্লুমবার্গ।

গত বৃহস্পতিবার কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক অফিসে ফেরার নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের জুনের আগে সম্ভবত বেশির ভাগ কর্মী দল ফিরে আসতে পারবে না। ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারটিনো ঐতিহাসিকভাবে অফিস কেন্দ্রিক সংস্কৃতি অর্জন করেছে। তবে সংস্থাটির সিইও ইঙ্গিত দিয়েছেন, নভেল করোনাভাইরাস লকডাউনে কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজের বিষয়ে সফলতা পাওয়া গেছে। এটি ভবিষ্যতে দূর থেকে কাজ করতে আরো সক্ষম করে তুলবে। তবুও কুক চূড়ান্তভাবে কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অনড় ছিলেন।

বক্তব্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মীদের মতে, কুক বলেছেন সরাসরি কাজের কোনো বিকল্প নেই। তবে উৎপাদন কিংবা ফলাফলের কোনো হেরফের ছাড়াই অফিসের বাইরে থেকে কীভাবে আমরা কাজ শেষ করতে পারি সে সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছি। এসব শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। মহামারী শেষেও আমরা এ বছরের সেরা রূপান্তরগুলো বজায় রাখব।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চ্যালেঞ্জের কারণে অ্যাপলের অনেক অঞ্চলের কর্মীদের বেতনসহ অতিরিক্ত ছুটি দেয়ার কথাও জানিয়েছেন কুক। অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন গুগলসহ অন্যান্য সংস্থাও সম্প্রতি কর্মীদের বেতনসহ অতিরিক্ত ছুটি দিয়েছে।

কুক উল্লেখ করেন, এ বছর অ্যাপলের কর্মীদের অনুদানের কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা হচ্ছে। উদ্যোগটি শুরু হওয়ার পর থেকে দাতব্য সংস্থাগুলোতে ৫৯ কোটি ১ লাখ ডলারেরও বেশি অনুদান দেয়া হয়েছে এবং কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবায় ১৬ লাখ ঘণ্টারও বেশি কাজ করেছেন। অ্যাপল কভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার জন্য সংস্থাগুলোকে ৫০ লাখ ডলার অনুদান দিচ্ছে।

সভায় খুচরা, আইনি, পরিবেশ, বিপণন, পরিষেবাদি, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, অপারেশন ও মেশিন লার্নিং বিভাগের প্রধানরাসহ অ্যাপলের আরো কয়েকজন কর্মকর্তা বক্তব্য দিয়েছেন।

হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড্যান রিকো বাড়ি থেকে কাজকে ডিভাইস ডিজাইনের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ বলে অভিহিত করেন, যা সাধারণত ল্যাব সেটিংসে করা হয়। তিনি বলেন, প্রকৌশলীরা বাড়ি থেকে রোবট নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিদেশী কারখানার প্রযুক্তিবিদদের গাইড করতে অ্যাগমেন্টেড-রিয়েলিটি সফটওয়্যারসহ আইপ্যাডগুলো ব্যবহার করে কাজ করেছে। চীনে নিযুক্ত কর্মীদের সঙ্গে আরো ভালোভাবে যোগাযোগ করতে কর্মীরা কাজ করছেন।

অ্যাপল আগামী দিনে অগমেন্টেড-রিয়েলিটি ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হার্ডওয়্যার পণ্য তৈরিতে মনোনিবেশ করেছে। সংস্থাটির চিফ অপারেটিং অফিসার জেফ উইলিয়ামস বলেন, অ্যাপলের ডিজাইন দলটি বাড়ি থেকে কাজ করার নতুন উপায় আবিষ্কার করেছে। যেখানে অপারেশনস এক্সিকিউটিভ সাবিহ খান এ বছর ন্যূনতম বিলম্ব হলেও পণ্য তৈরির জন্য তার দলের দক্ষতার প্রশংসা করেছেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *