ইঞ্জিনের দক্ষতা বিবেচনায় দেশে বিদ্যুত্চালিত যানবাহনের ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
গতকাল অনলাইনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের যন্ত্রকৌশল বিভাগ আয়োজিত ‘এনার্জি সিকিউরিটি অব বাংলাদেশ: ইস্যু অ্যান্ড অপশন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, তেলচালিত যানবাহনের ইঞ্জিনের দক্ষতা ২০ শতাংশ আর বিদ্যুত্চালিত যানবাহনের ইঞ্জিনের দক্ষতা ৮০ শতাংশ। তাই বিদ্যুত্চালিত যানবাহনের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য নীতিগত সমর্থন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বিদ্যুত্চালিত যানবাহনের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ প্রয়োজনীয় চার্জিং স্টেশন করে দেবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন যত পরিকল্পিতভাবে হবে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ তত টেকসই হবে।
এ সময় তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নেট মিটারিং সিস্টেম, মাইক্রো ও ম্যাক্রো লেভেলের তথ্য, অটোমেশন, বিনিয়োগ এবং করোনা মহামারী পরবর্তী জ্বালানি চাহিদা নিয়ে আলোচনা করেন।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে খাতভিত্তিক মহাপরিকল্পনা নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করবে। বিতরণ ও সঞ্চালন খাতে ধারাবাহিকভাবে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হচ্ছে। আগামী দিনের চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে মানবসম্পদ উন্নয়নকেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম। তিনি জ্বালানি খাতের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন, আগামী দিনের চাহিদা, আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ আইন, গ্যাস ও এলএনজির ব্যবহার, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা নিয়ে তার প্রবন্ধে আলোকপাত করেন।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের যন্ত্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল এ সেমিনারে অন্যদের মাঝে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক ও আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক ও আন্তর্জাতিক) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন, জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আতিকুজ্জামান, আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল হুদা এবং আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বক্তব্য রাখেন।
প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় স্বার্থে দেশের বৃহৎ পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র তিতাস, বাখরাবাদ, রশিদপুর, কৈলাশটিলা ও হবিগঞ্জ বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী বহুজাতিক তেল কোম্পানি শেল অয়েল ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্য কিনে নিয়েছিলেন। মানব সভ্যতার অস্বিস্ত নির্ভর করে জ্বালানিশক্তির ওপর। দেশের জন্য বর্তমানে জ্বালানি একটি অপরিহার্য সম্পদ। শুধু আমাদের দেশে নয়, জ্বালানি ব্যতীত পৃথিবীর গতিশীলতা স্তব্ধ হয়ে যাবে। সভ্যতার ক্রমবিকাশের প্রতিটি ক্ষেত্রে জ্বালানির প্রয়োজন।