৬২০ কোটি ডলারে ট্র্যাকফোন কিনছে ভেরাইজন

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিকম ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠান ভেরাইজন আমেরিকা মোভিলের কাছ থেকে ৬২০ কোটি ডলার ব্যয়ে প্রিপেইড মোবাইল প্রোভাইডার ট্র্যাকফোন কিনছে। মূলত স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের টার্গেট করেই এ অধিগ্রহণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর টেলিকম লিড।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইল স্টোরের প্রায় ৭০ শতাংশই বন্ধ ছিল। এতে প্রথম প্রান্তিকে মোবাইলের মাধ্যমে মাসিক বিল পরিশোধ করেন এমন ৬৮ হাজার গ্রাহক হারিয়েছে ভেরাইজন। এছাড়া জার্মান টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি ডয়েচ টেলিকম এজির সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান টি-মোবাইলের বাজার ধরার আগ্রাসী মনোভাবের কারণেও মোবাইল গ্রাহক হারাচ্ছে ভেরাইজন ও এটিঅ্যান্ডটির মতো মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন প্রেক্ষাপটের মধ্যেই ট্র্যাকফোনের মতো প্রিপেইড মোবাইল প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে ভেরাইজন।

প্রযুক্তি খাতে আধিপত্য বাড়াতে বিনিয়োগের ওপর বেশ জোর দিচ্ছে মার্কিন ওয়্যারলেস অপারেটর প্রতিষ্ঠান ভেরাইজন। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চলতি বছর তারা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে ১ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার থেকে ১ হাজার ৮৫০ কোটি ডলারের মধ্যে রাখবে। যেখানে এর আগের প্রাক্কলনে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। মূলত ফাইভজি নেটওয়ার্কে বিস্তৃতি করার অংশ হিসেবে এ বিনিয়োগ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মাল্টিন্যাশনাল কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠান এটিঅ্যান্ডটিকে টপকে ওয়্যারলেস প্রোভাইডার হিসেবে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে চলে এসেছে জার্মান প্রতিষ্ঠান টি-মোবাইল। তবে নতুন এ অধিগ্রহণের ফলে ভেরাইজন এখন বাজারে তাদের উপস্থিতি আগের তুলনায় বাড়াতে পারবে। কারণ ভেরাইজনের মূল লক্ষ্যই হলো ভ্যালু সেগমেন্টে তাদের উপস্থিতি বাড়ানো। এ কারণেই দীর্ঘদিনের অংশীদারি প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকফোনকে অধিগ্রহণের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি।

ওয়্যারলেস সার্ভিস রিসেলার হিসেবে ট্র্যাকফোন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। ৮৫০ জন কর্মীসমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি দেশটির প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ গ্রাহককে সেবা দিয়ে আসছে। দেশব্যাপী ৯০ হাজারের বেশি রিটেইল পয়েন্ট রয়েছে তাদের। তবে ভেরাইজনের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ী, ট্র্যাকফোনের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহক ভেরাইজনের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

বিবৃতিতে ভেরাইজন বলছে, তাদের মূল পরিকল্পনা হলো তাদের সেবাকে আরো উন্নত করা। আবাসিক এলাকায় তারবিহীন ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপন, ফাইভজি প্রযুক্তি সরবরাহ এবং আন্তর্জাতিক কলিং ও রোমিং সুবিধাকে আরো বেশি প্রসারিত করা।

অন্যদিকে ট্র্যাকফোন অধিগ্রহণের পর এটির সেবাকে আরো উন্নত করার পরিকল্পনা করেছে ভেরাইজন। বিশেষ করে এটির মূল ব্র্যান্ড, পণ্য এবং বিতরণ চ্যানেলগুলোকে আরো উন্নত করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। আর ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যে এ অধিগ্রহণের অর্থ পরিশোধ করতে চায় ভেরাইজন।

ট্র্যাকফোন অধিগ্রহণের বিষয়ে ভেরাইজনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেনস ভেস্টবার্গ বলেন, মূলত আর্থিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে থাকার কারণেই এ অধিগ্রহণে উদ্যোগী হয়েছে ভেরাইজন।

অন্যদিকে ট্র্যাকফোনের মতো প্রতিষ্ঠানকে অধিগ্রহণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ভেরাইজন কনজ্যুমার গ্রুপের গ্রুপ সিইও রোনান ডান বলেন, কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই ট্র্যাকফোন শক্তিশালী একটি ভোক্তা ব্র্যান্ড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। মোবাইল সেগমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান তাদের নেতৃত্বও প্রতিষ্ঠা করেছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *