৫৪ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নিতে তাগাদা দিচ্ছে সৌদি আরব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সৌদি আরব থেকে ৫৪ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ রয়েছে বলে জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে কোনো আলোচনা করতে গেলেই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলে দেশটি।

গতকাল প্রবাসীদের নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সৌদি আবর যে ৫৪ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিল, তাদের ফেরত না নিলে শ্রমবাজার বন্ধ ও বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানো হবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুুল মোমেন বলেন, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু দেশ। তাদেরও সমস্যা রয়েছে। ইদানীং সেখানে তাদের অনেকের চাকরি চলে গেছে। অর্থনীতিতে একটু ধস নেমেছে।

ড. মোমেন বলেন, ১৯৮০ ও ১৯৯০ সালের দিকে সৌদির তত্কালীন রাজা রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে অনেককে তার দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন। অনেকে সরাসরি গিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমাদের কাছে নেই। সৌদি আরব বলছে, প্রায় ৫৪ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে আছে। সেই রোহিঙ্গার আবার অনেকের পরিবার হয়েছে। তাদের ছেলেমেয়েরা জীবনে বাংলাদেশে আসেনি। তারা সেই দেশের সংস্কৃতিতে বড় হয়েছে, আরবিতে কথা বলে। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেও না। কিন্তু সৌদি সরকার প্রথম বলেছিল ৪৬২ জন রোহিঙ্গার কথা। তারা জেলে রয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশকে জানিয়েছিল।

মন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি, যদি বাংলাদেশী নাগরিক হয়, অবশ্যই আমরা তাদের নিয়ে আসব। তবে তার আগে আমরা একটা যাচাই-বাছাই করব। তাদের কোনো বাংলাদেশী পাসপোর্ট আছে কিনা বা ছিল কিনা। আর তারা বাংলাদেশী নাগরিক, এর কোনো তথ্য যদি দেয় তবে আমরা তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়ে নিয়ে আসব। আমরা এটি যাচাই-বাছাই করেছি। আমাদের মিশন সেখানে গিয়ে দেখে অধিকাংশেরই কোনো নথি নেই। বাংলাদেশী নাগরিক হলে আমরা নিয়ে আসব। অন্য দেশের নাগরিক হলে আমরা জানি না।

৫৪ হাজার রোহিঙ্গার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এর সঙ্গে তারা (সৌদি আরব) আরো বললেন ৫৪ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে আছে। সৌদি জানিয়েছে, তাদের কোনো পাসপোর্ট বা নথি নেই। তারা বলেছে, বাংলাদেশ যদি তাদের পাসপোর্ট রি-ইস্যু করে তাহলে ভালো। আমরা তা করিনি। আর যাদের আগে বাংলাদেশী পাসপোর্ট ছিল, বাংলাদেশ থেকে যারা গিয়েছিল, তাদের যদি কোনো সময়ে কোনো পাসপোর্ট থাকে, তাহলে আমরা তাদের নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করব। আমরা এ বিষয়ে একটি কমিটি নিয়োগ করেছি। তারা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করবেন।

এদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে রুয়ান্ডা আগ্রহী। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনসেন্ট বিরুটা এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *