২০২৪-২৫ থেকে ঋণ পরিশোধে অস্বস্তি শুরু হবে বাংলাদেশের

বিদেশ থেকে ঋণগ্রহণ এবং পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘সবুজ’ অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু ২০২৪-২৫ সাল নাগাদ এ অবস্থানের অবনমন হওয়ার ঝুঁকি আছে। তখন বিদেশী ঋণ পরিশোধে অস্বস্তি শুরু হবে বাংলাদেশের।

গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে অনলাইনে ‘সরকারি দায়-দেনা’ শীর্ষক এক আলোচনায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় ঋণ পরিশোধের বর্তমান অবস্থাকে ‘সবুজ’ (স্বস্তিদায়ক) আখ্যা দিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে তা ‘হলুদ’ (অস্বস্তিদায়ক) হতে পারে বলে মন্তব্য করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কিছু প্রকল্পে উচ্চমূল্যের ঋণ পরিশোধের সময়সূচি ঘনিয়ে আসছে। অন্যদিকে সরকার উচ্চাভিলাষী সব প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। এখন বিশ্বব্যাংক, জাপানসহ প্রথাগতভাবে যারা কম সুদে ঋণ দিত তারা এসব প্রকল্পে কম সুদে ঋণ দিচ্ছে না। ফলে সরকার উচ্চসুদে ঋণ গ্রহণের দিকে ঝুঁকছে। আবার উচ্চসুদে ঋণ নিয়ে করা এসব প্রকল্প থেকে লাভবান হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এতে স্বস্তির জায়গাটা কমে আসছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, নির্বাচনী বছরগুলোয় সরকারের অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশী ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। গত তিন বছরে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ করে সরকারি ঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল এবং ২০১৮ সাল থেকে এখন অবদি ঋণ বাড়ছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচনের বছর অথবা নির্বাচনের আগের বা পরের বছরে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়তে দেখা যায়। ২২-২৩ এর শেষের দিকে নির্বাচনের বছরে ঋণ আবারো বাড়ে কিনা তা এখন দেখার বিষয়।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রকৃত অর্থে মোট ঋণের পরিমাণ মোট দেশজ আয়ের ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ। মাথাপিছু সরকারি দেনা ৪৩২ ডলার। মোট দায়, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক—এ তিন ধরনের দায়-দেনাই নির্বাচনী বছরগুলোয় বেড়েছে। এসব দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে খুব বেশি ধারাবাহিকতা নেই। প্রতি বছর এ বিশাল পরিমাণ দায় পরিশোধের কারণে বাজেট ঘাটতি হচ্ছে।

ঋণের ঝুঁকি নিয়ে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ঋণের ক্ষেত্রে পাঁচটি ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে বিনিময় হার, বৈদেশিক ঋণ এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদহারের ঝুঁকি বাংলাদেশে বাড়ছে। অন্যদিকে প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উচ্চঝুঁকি রয়েছে। আবার প্রকল্প থেকে অর্থনৈতিক লাভ কতটুকু হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *