চলমান বৈশ্বিক মহামারী সত্ত্বেও ২০২২ সালে চিপ বিক্রি ৯ শতাংশ বাড়বে। এছাড়া প্রথমবারের মতো বার্ষিক চিপ বিক্রি ৬০ হাজার কোটি ডলার ছাড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। প্যারিসভিত্তিক ক্রেডিট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ইউলার হার্মিসের বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর টেক টাইমস।
বৈশ্বিক চিপের বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি এ খাতে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা। গতকাল প্রকাশিত ইউলার হার্মিসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বছর দুয়েক আগে এ খাতে ভয়াবহ শ্লথগতির পর থেকেই এ শিল্প সব দিক থেকে চাপের মধ্যে রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক চাহিদার ওপর দাঁড়িয়ে ২০২১ সালে এ চিপ বিক্রি ২৬ শতাংশ বেড়ে ৫৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালেও চিপ বিক্রিতে দুই অংকের প্রবৃদ্ধির আশাবাদ কিছু বিশ্লেষকের।
তবে ইতিবাচক পূর্বাভাসের বিপরীতে নেতিবাচক খবর হলো কভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি চিপনির্ভর কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিপ নির্মাতা জায়ান্ট ইন্টেলের সিইও প্যাট জেলসিংগারের পূর্বাভাস, ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রলম্বিত হতে পারে চলমান চিপ সংকট।
চিপ সংকট শুধু যে কম্পিউটারনির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরই প্রভাব ফেলছে এমন নয়, বরং বিভিন্ন স্টার্টআপ ও বড় কোম্পানি এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি থেকে শুরু করে গেমিং কনসোল, গৃহস্থালি সামগ্রী, বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি। চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও বিভিন্ন উপকরণ সংকটের কারণে চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না।
সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তি খাতে আধিপত্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরোধ নতুন বছরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে দেখা যাবে। সেমিকন্ডাক্টর সেগমেন্টে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে এতে বিনিয়োগ করছে শীর্ষ চীনা কোম্পানিগুলো, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অন্যান্য সরবরাহকারী দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে কমিউনিস্ট পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় সর্বাগ্রে রয়েছে চিপ। সেমিকন্ডাক্টর খাতে স্বনির্ভরতা বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। চীনের সাফল্য অবশ্য অন্য দেশের জন্য হুমকির কারণ বলে মনে করছেন কিছু পশ্চিমা বিশ্লেষক। এটা উদ্ভাবন পিছিয়ে দেয়াসহ বৈশ্বিক বাণিজ্য বিঘ্নিত করবে এবং এতে বিশ্ব আরো দরিদ্রতর হবে।
প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অন্যান্য সরবরাহকারী দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে কমিউনিস্ট পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় সর্বাগ্রে রয়েছে চিপ। সেমিকন্ডাক্টর খাতে স্বনির্ভরতা বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। চীনের সাফল্য অবশ্য অন্য দেশের জন্য হুমকির কারণ বলে মনে করছেন কিছু পশ্চিমা বিশ্লেষক। এটা উদ্ভাবন পিছিয়ে দেয়াসহ বৈশ্বিক বাণিজ্য বিঘ্নিত করবে এবং এতে বিশ্ব আরো দরিদ্রতর হবে।
বিশ্বের প্রায় সব স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার চীনের বিভিন্ন কারখানায় অ্যাসেম্বল হচ্ছে। এক্ষেত্রে উপকরণের জন্য তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর। জ্বালানি তেলকে ছাড়িয়ে চীনের সবচেয়ে বড় আমদানি পণ্য হচ্ছে চিপ। গত বছর চিপ আমদানিতে তাদের ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার কোটি ডলার।
স্মার্টফোন, গাড়ি থেকে শুরু করে চিকিৎসাসামগ্রী ও গৃহস্থালি পণ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চিপ। করোনা মহামারীর ফলে চিপ-স্বল্পতায় বৈশ্বিক ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে এবং কাঙ্ক্ষিত সময়ে গ্রাহকের হাতে পণ্য তুলে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।