খুব চেনা প্রাঙ্গণ, স্তাদিও মনুমেন্তাল। ঘরের মাঠে দর্শকদের সঙ্গে কোপা আমেরিকার শিরোপা উদ্যাপনের পরিকল্পনা মেসি বাহিনীর । সেজন্যই হয়তো জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় গ্যালারির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছিলেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন অধিনায়কের সেই হাসি আরও চওড়া হয়েছে ৯০ মিনিট পর। হ্যাটট্রিকে রাঙিয়েছেন তিন মাস পর নিজেদের আঙিনায় প্রত্যাবর্তনটা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটিতে বলিভিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা উদযাপনটাও করলেন জম্পেশ।
গত ১১ই জুলাই ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ে সেদিন অঝোরে কেঁদেছিলেন মেসি।
আজও কাঁদলেন, ঘরের মাঠে শিরোপা উদযাপনের সময়। গত ৪ঠা জুন সর্বশেষ নিজেদের মাঠে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার পর এটি তৃতীয় ম্যাচ আলবেসেলিস্তেদের। আগের দুটি ম্যাচে ভেনেজুয়েলা এবং ব্রাজিলের আতিথ্য নিয়েছিল লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।
শুক্রবার ভোরে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলিভিয়ার ওপর আধিপত্য বিস্তার করে আর্জেন্টিনা। এক তৃতীয়াংশ বল দখলে রেখে গোলবারের উদ্দেশ্যে মোট ২৪টি শট নেয় স্বাগতিকরা। যার লক্ষ্যে ছিল ৭টি। অপরদিকে মাত্র ২৯ শতাংশ বল দখলে রেখে ৭টি শটের ৩টি লক্ষ্যে রাখতে সমর্থ্য হয় বলিভিয়া।
ঘরের মাঠে গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের সামনে গোটা ম্যাচেই বেশ প্রানবন্ত ছিলেন মেসি। ভক্ত-সমর্থকদের আনন্দে ভাসাতেও বেশি সময় নেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। চতুর্দশ মিনিটে মেসির দারুণ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। লিয়ান্দ্রো পারেদেসের পাস ধরে একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ২০ গজ দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করেন সদ্য পিএসজিতে যোগ দেয়া মেসি।
২৭তম মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে লাউতারো মার্টিনেজের গোল। ৪০তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট করেন ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে মেসি বল পাস দেন তাকে, কিন্তু পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন মার্টিনেজ।
দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার পাস ধরে মেসির নেয়া শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে রদ্রিগো ডি পলের ভুলে এগিয়ে যেতে পারতো বলিভিয়া। নিজেদের ডি-বক্সের মুখে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে ব্যাকপাস দিয়ে বসেন ডি পল। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন বলিভিয়ার মিডফিল্ডার হেনরি ভাকা।
বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণে ধার বাড়ায় আর্জেন্টিনা। ফলও পেয়ে যায় ৬৪তম মিনিটে। ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি।
৭৪তম মিনিটে আবার বল জালে পাঠান মেসি। তবে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে তার গোল।
৮৮তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন মেসি। হোয়াকিন কোরেয়ার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বল হাতে রাখতে পারেননি গোলরক্ষক। গোলমুখে ছুটে যাওয়া মেসি ফিরতি শটে সহজেই বল জালে জড়ান।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এটি আর্জেন্টিনার পঞ্চম ম্যাচ। ১৮ ম্যাচে ৫ জয় এবং ৩ ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে স্কালোনির দল। ৮ ম্যাচের সবকটি জিতে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ব্রাজিল।