সেনাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জিনপিংয়ের

সেনাবাহিনীকে মানসিকভাবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মঙ্গলবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডংয়ের চাওজো সিটিতে পিপলস লিবারেশন আর্মি মেরিন কোর পরিদর্শনকালে জিনপিং সেনাদের সব শক্তি ও মনোযোগ যুদ্ধের প্রস্তুতিতে নিয়োজিত করার আহ্বান জানান। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।

সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনীকে উচ্চমাত্রায় সতর্ক অবস্থান বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং তাদের সম্পূর্ণরূপে অনুগত ও নির্ভরযোগ্য হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জিনপিংয়ের গুয়াংডং সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী মূলধন আকৃষ্ট করা ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত শেনজেন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৪০তম বার্ষিকীর স্মরণে ভাষণ দেয়া। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি চীনকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সামরিক এ সফরটি এমন সময়ে ঘটল, যখন চীন-মার্কিন উত্তেজনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে তাইওয়ান ও নভেল করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ে পদক্ষেপ-পাল্টা পদক্ষেপ ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার সংকটকে তীব্র করেছে।

হোয়াইট হাউজ সোমবার মার্কিন কংগ্রেসকে জানিয়েছে, তারা উন্নত হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেমসহ (এইচআইএমএআরএস) তিনটি উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থা তাইওয়ানের কাছে বিক্রির পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় বেইজিংয়ের তীব্র প্রতিক্রিয়া হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাও লিজিয়ান ওয়াশিংটনকে তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা অবিলম্বে বাতিল করার ও মার্কিন-তাইওয়ান সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।

অবশ্য তাইওয়ান কখনই চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়নি, যদিও স্বশাসিত দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করেছে বেইজিং।

চীন সরকারের অসন্তুষ্টি সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসনের হাত ধরে ওয়াশিংটন ও তাইপের মধ্যে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে। মহামারী নিয়ে আলোচনা করতে দ্বীপটিতে ভ্রমণ করে আগস্টে মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানবসেবা অ্যালেক্স আজার কয়েক দশকে তাইওয়ান সফরকারী সর্বোচ্চ স্তরের মার্কিন কর্মকর্তা হয়েছিলেন।

এসব ঘটনার জবাবে বেইজিং তাইওয়ানের আশপাশে সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে। ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর প্রায় ৪০টি চীনা যুদ্ধবিমান মূল ভূখণ্ড ও তাইওয়ানের আকাশসীমা অতিক্রম করেছিল। দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন এটাকে ‘শক্তির হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

১৬ সেপ্টেম্বর আরএএনডি করপোরেশনকে দেয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পার বলেন, নৌ শক্তিতে চীন আমেরিকার সঙ্গে মেলে না। তিনি একে বেইজিংয়ের ‘ক্ষতিকর ক্ষমতা’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়া ক্ষমতার ভারসাম্যকে তাদের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এবং প্রায়ই অন্যের ব্যয়ে লুণ্ঠনমূলক অর্থনীতি, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি ও সামরিক শক্তির ব্যবহার করে থাকে।

অক্টোবরের গোড়ার দিকে এস্পার তার ‘ব্যাটেল ফোর্স ২০৪৫’ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে ২০৪৫ সালের মধ্যে ৫০০টি মানবপূর্ণ ও মানবহীন জাহাজের সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণে মার্কিন নৌবাহিনীকে আহ্বান জানানো হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *