সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর (ডাকুয়ার ভিটা) গ্রামের আব্দুল হামিদ সরকার কর্তৃক মেয়ে হালিমা বেগমকে বার বার বিয়ে ও তালাকের মাধ্যমে মোহরানা আদায় বাণিজ্য চলছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে দুপুরে উক্ত গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে আঃ হামিদ কিছু সহযোগীকে সঙ্গে করে জামাই বাড়িতে না থাকায় কৌশলে মেয়ে হালিমা বেগম ও তার অসুস্থ ২ মেয়েকে অটোবাইকে তুলে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর থেকে হালিমা বেগমের সঙ্গে স্বামী ও শ্বশুড়ের সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে আব্দুল হামিদ ও তার ২ স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। একইভাবে বাবা ও দাদার সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তার পরিবারের লোকজন। ফলে বিবিএ অনার্স ১ম বর্ষের পরিক্ষার্থী বড় মেয়ে ও পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছোট মেয়ের লেখাপড়া ও চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছে বলে বাবা আবু বকর ছিদ্দিক জানান। আব্দুল হামিদ ও তার ২ স্ত্রীর ৮ ছেলে মেয়ের মধ্যে হালিমা বেগম বড় মেয়ে। ১ম স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া হালিমা বেগমকে প্রথমত বিয়ে দেয় গাইবান্ধা সদরের মালিবাড়ি ইউনিয়নের সরিষার খামার গ্রামের এনায়েত উল্লাহ্-আমিনা বেগম দম্পত্তির ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। বিয়ের পর আইনগত জটিলতায় ফেলে অবশেষে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার নামে মেয়ে হালিমার ধার্যকৃত মোহরানা ও খোরপোষ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তালাকের মাধ্যমে সংসার বিচ্ছেদ ঘটায় হালিমার বাবা আব্দুল হামিদ। এরপর পার্শ্ববর্তী (শাহার ভিটা) গ্রামের বক্করজামাল নামে এক যুবকের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিয়ে পড়ানোর কিছুদিন পর একইভাবে আবারও হালিমার সংসার বিচ্ছেদ ঘটায় পিতা আব্দুল হামিদ। এখানেও আর এক দফা মেয়ের খোরপোষ ও মোহরানা বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় হালিমার মোহরানা লোভী পিতা আঃ হামিদ। এসব তথ্য গোপন রেখে ১৯৯৭ইং সালে মেয়ে হালিমাকে কুমারী দেখিয়ে অত্যন্ত অপকৌশলে পূণরায় বিয়ে নিবন্ধনে বাধ্য করায় পার্শ্ববর্তী উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের আবু বকর ছিদ্দিককে। এখানে বিয়ে দেয়ার পর ২০০০ সালের ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৩ সালের ২১ জানুয়ারী, ২০০৫ সালের ৮ অক্টবর ও ২০০৭ সালের ১৮মে সহ বিভিন্ন সময় আবু বকরের কাছ থেকে মোহরানা ও খোরপোষ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোর মাধ্যমে হালিমার এ সংসারেও বিচ্ছেদ ঘটানোর পায়তারা চালায় তার পিতা। এব্যাপারে আবু বকর ছিদ্দিক জানান, তার স্ত্রী হালিমা বেগমকে বার বার সংসার বিচ্ছেদের মাধ্যমে বিয়ের ধার্যকৃত মোহরানা ও খোরপোষ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা কামানো বাণিজ্য করে আসা শ্বশুড় আব্দুল হামিদের সঙ্গে তার কোন আত্মীয়তা সম্পর্ক নেই। ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে শান্তিতে সংসার করে আসায় আব্দুল হামিদ বিভিন্ন সময় একই পরিকল্পনা করে একই কায়দায় লাভের অঙ্ক কষছে তার শ্বশুড়। এমনকি হালিমাকে আবার বিয়ে দেয়ার জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে বাবা আব্দুল হামিদ। তাদের (আবু বকর-হালিমার) সংসারের ২ মেয়ে। বড় মেয়ে বিবিএ অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী, ছোট মেয়ে স্থানীয় কেজি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। তাছাড়া, মেয়েরা অসুস্থ। তার স্ত্রীসহ মেয়েদেরকে এভাবে নিয়ে গিয়ে তাদের লেখাপড়া ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে শ্বশুড় আব্দুল হামিদ ও তার ২ স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এব্যাপারে তিনি মেয়েদের চিকিৎসা, শিক্ষাসহ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন। একই সঙ্গে মেয়ের মোহরানা বাণিজ্য চালিয়ে আসা লোভী পিতা আব্দুল হামিদ ও তার সহযোগীদের বিচার দাবী করেন। এব্যাপারে হালিমার বাবার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনেই মোবাইলফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন আব্দুল হামিদ সরকার।