সিএমএসএমই খাতে ঋণের কাঠামোগত সংস্কারের দাবি

কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) বিকাশে এবং আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ঋণ প্রদানের কাঠামোগত সংস্কার জরুরি বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এজন্য বিশেষায়িত ব্যাংক স্থাপন, এসএমই ডাটাবেজ তৈরি, সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তাবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করছেন তারা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভা থেকে গতকাল এমন প্রস্তাব করা হয়।

‘এসএমই প্রণোদনা প্যাকেজ হতে ঋণপ্রাপ্তির পদ্ধতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, শিল্প খাতে ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ৪৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে সিএমএসএমই খাত। তবে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও নীতিগত সহায়তার অভাবে সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সম্ভাবনা ও কর্মদক্ষতার পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছে না।

করোনার প্রভাবে সিএমএসএমই খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ডিসিসিআই সভাপতি। গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে এসএমই খাতে সামগ্রিকভাবে আয় হ্রাস হয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। প্রায় ৭৬ শতাংশ উৎপাদিত পণ্য অবিক্রীত থেকে গেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রথম থেকেই এসএমই ফাউন্ডেশন কাজ করছে। পাশাপাশি এ খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার বাস্তবায়নে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করে তিনি বলেন, ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এ খাতের উদ্যোক্তাদের দেশের বিদ্যমান আইনি ও আর্থিক কাঠামোর সম্পর্কে সম্যক ধারণা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।

মাত্র দেড় মাসেই শুধু এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে ১২২ কোটি বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে সভায় জানান এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরাসরি ঋণ দেয়া সম্ভব হলে এ খাতের উদ্যোক্তাদের আরো কার্যকরভাবে ঋণসহায়তা প্রদান সম্ভব হতো।

এ খাতের উদ্যোক্তাদের সহায়তা নিশ্চিতকরণে দেশে একটি বিশেষায়িত এসএমই ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব করে তিনি বলেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার থেকে এসএমই ফাউন্ডেশনকে প্রদত্ত ২০০ কোটি টাকা এ খাতের উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র সাহা। মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এনকেএ মবিন সিএমএসএমই খাতের উন্নয়নে একটি সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশনকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি দেশের সেবা খাতের বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি ঋণসহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করেন।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই পরিচালক খায়রুল মজিদ মাহমুদ, আইডিএলসি ফাইন্যান্সের হেড অব এসএমই সাইফোদ্দৌলা শামীম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *