ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হলেন যারা

নিউজ ডেস্ক: বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ষষ্ঠ ধাপে ২২ জেলার ৪২ উপজেলার ২১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এর মধ্যে ২১৬ ইউপিতে ইভিএমে এবং মাত্র দুটি ইউনিয়নে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়।

ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টিতেই পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। ১টি বিএনপি, ১টি জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৪টিতে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শায়েস্তাগঞ্জ সদর ইউপিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী বুলবুল খান, বাহুবল সদরে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী আজমল হোসেন খান, মিরপুরে বিএনপি নেতা মো. শামীম, লামাতাশি জাতীয় পার্টি প্রার্থী উস্তার মিয়া তালুকদার, পুটিজুরি ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় আলহাজ মো. মুদ্দত আলী, স্নানঘাটে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী মো. তোফাজ্জল হক রাহিন, ভাদেশ্বরে আওয়ামী লীগ দলীয় কামরুজ্জামান বশির ও সাতকাপন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী আব্দুর রাজ্জাক জয় পেয়েছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।[১] ভ্যাট গোয়েন্দা জরিপ: ভ্যাট দেয়া না ৮৮ শতাংশ দোকানইজিবাইক চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার[১] বোয়ালমারীতে ইঁদুর নিধন অভিযান উপলক্ষে আলোচনা সভা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও নবীনগর উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বেসরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা নির্বাচন অফিস জানিয়েছেন, ফলাফল অনুযায়ী নবীনগর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নির্বাচনের ৪টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, ১টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচিত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা হলেন, বিটঘর ইউপিতে মেহেদী জাফর (নৌকা), কাইতলা দক্ষিণ ইউপিতে মো. শওকত আলী (নৌকা), বড়াইল ইউপিতে মো. জাকির হোসেন (নৌকা) ও বিদ্যাকুট ইউপিতে জাকারুল হক (নৌকা)।

নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন, কৃষ্ণনগর ইউপিতে আমজাদ হোসেন (চশমা) ও শিবপুর ইউপিতে এম.আর মজিব (আনারস) এবং নাটঘর ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তারুজ্জামান (মোটরসাইকেল)।

এদিকে কসবা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে বিজয়ীরা হলেন, মেহারী ইউপিতে মোশারফ হোসেন (টেবিলফ্যান), বাদৈর ইউপিতে শিপন আহম্মদ ভূইয়া (চশমা), গোপীনাথপুর ইউপিতে মো. মিজানুর রহমান (টেবিল ফ্যান), বিনাউটি ইউপিতে বেদন খান (ঘোড়া), কায়েমপুর ইউপিতে ইকতিয়ার আলম রনি (আনারস), বায়েক ইউপিতে মো. বিল্লাল হোসেন (অটোরিকশা) ও কসবা পশ্চিম ইউপিতে মো. মানিক মিয়া (অটোরিকশা)।

এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত দুই উপজেলার ১৪ ইউপিতে ইভিএম-এ শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ হওয়ায় বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটাররা নানান বিড়ম্বনার শিকার হয়েছে।

কসবা উপজেলার ৭টি ও নবীনগর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন মোট ১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৪৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৪৫২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

হিলি

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা এবং ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। রাতে ভোট গণনা শেষে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বেসরকারিভাবে এ ফল ঘোষণা করেন।

বিজয়ীরা হলেন, ১নং বুলাকিপুর ইউনিয়নে সদের আলী (নৌকা), ২নং পালশা ইউনিয়নে কবিরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), ৩নং সিংড়া ইউনিয়নে সাজ্জাদ হোসেন (স্বতন্ত্র) এবং ৪নং ঘোড়াঘাট ইউনিয়নে আসাদ্দুজ্জামান ভুট্টু (নৌকা) বে-সরকারি ভাবে জয়লাভ করেছেন।

মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত তিনজন, আওয়ামী লীগ মনোনীত দু’জন এবং আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচিতরা হলেন-শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন (বিএনপি সমর্থিত-স্বতন্ত্র) , উলাইল ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান (বিএনপি সমর্থিত-স্বতন্ত্র), মহাদেবপুর ইউনিয়নে শাহজাহান মিয়া (বিএনপি সমর্থিত-স্বতন্ত্র), উথলি ইউনিয়নে আব্বাস আলী (আওয়ামী লীগ মনোনীত), শিমুলিয়া ইউনিয়নে জহির উদ্দিন মানিক (আওয়ামী লীগ মনোনীত), আরুয়া ইউনিয়নে মোনায়েম মুনতাকিম খান অনিক (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী-স্বতন্ত্র ) ও তেওতা ইউনিয়নে মোশারফ হোসেন মোল্লা (আওয়ামী লীগের বিদ্রাহী-স্বতন্ত্র)।

দিনাজপুর

দিনাজপুরের ৪টি উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১১ টি এবং স্বতন্ত্র পদে ১০ জন বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন।

৪ টি উপজেলার নির্বাচনে দায়িত্বরত রির্টানিং অফিসাররা জানিয়েছেন, দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৪টিতে নৌকা এবং ৫টিতে স্বতন্ত্র, বিরল উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ৪টিতে নৌকা ২টিতে স্বতন্ত্র, ঘোড়াঘাটে ৪টি ইউনিয়নে ২টিতে নৌকা, ২টি স্বতন্ত্র এবং বীরগঞ্জ উপজেলার ২টি ইউনিয়নে ১টিতে নৌকা এবং ১টিতে স্বতন্ত্র পদে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

বগুড়া

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার দুই ইউপিতেই নৌকা প্রার্থীর জয় হয়েছে। সোনারায় ইউপিতে মজিবর রহমান নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ৬০০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুল ইসলাম চশমা প্রতীকে ৫ হাজার ৪৪৪ ভোট পেয়েছেন।

অপরদিকে, নেপালতলী ইউপিতে শহিদুল ইসলাম রাজু নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী জুলফিকার হায়দার ঘোড়া প্রতীকে ৫ হাজার ৮২৭ ভোট পেয়েছেন।

এ ছাড়া, বগুড়া সদরের ফাঁপোড় ও রাজাপুর ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ফাপোঁড় ইউপিতে অটোরিকশা প্রতীকে মেহেদী হাসান ২ হাজার ৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া রাজাপুর ইউপিতে রাজিবুল ইসলাম খান রাজু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩ হাজার ৫১০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার এ এস এম জাকির হোসেন।

নওগাঁ

নওগাঁর নিয়ামতপুরে ৮ ইউপির ৭ টিতে আওয়ামী লীগ, একটি স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়।

ইসি সূত্র জানায়, এই নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছে ৪১ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটর ২১ লাখ ১৪ হাজার ৭২০ জন, নারী ভোটার ২০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ জন এবং ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে।

নির্বাচনে সারাদেশে বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১ হাজার ৬০৪ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ১৯৯, সংরক্ষিত আসনে ২ হাজার ৫৫৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৭ হাজার ৮৪৬ জন।

এদিকে ষষ্ঠ ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৪৪ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ১০০ প্রার্থী রয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলমান ইউপি নির্বাচনে ইতোমধ্যে পাঁচ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপে দুই দফায় ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ ছাড়াও ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউপিতে এবং চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর ৮৩৬ ইউপিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। পঞ্চম ধাপে গত ৫ জানুয়ারি ৭০৮ ইউপিতে ভোট হয়েছে। আজ (৩১ জানুয়ারি) ষষ্ঠ ধাপে ২১৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলছে। সপ্তম ও শেষ ধাপে ১৩৮ ইউপিতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *