শ্রীলঙ্কায় না গেলে হবে ‘ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ’

মার্চে স্থগিত হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ। এক রাউন্ড হওয়ার পর আর মাঠে গড়ায়নি দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম আসরটি। দেশের করোনা মহামারি পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এখন মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে মরিয়া। আগামী মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে মাঠে ফেরার দিনক্ষণ অনেকটা ঠিক হয়েছিল। কিন্তু এই সিরিজের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে লঙ্কানদের দেয়া ‘কোয়ারেন্টিন’ শর্ত। শ্রীলঙ্কায় গেলে ১৪ দিন ক্রিকেটাররা হোটেল থেকেই বের হওয়ার কোনো সুযোগ পাবেন না। অনুশীলন তো অনেক পরের ব্যাপার, রুমে বসেই তাদের খাওয়া-দাওয়া করে নিতে হবে।
এমন কঠিন শর্তে বিসিবি টেস্ট খেলতে রাজি নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। যদি শেষ পর্যন্ত সিরিজ না হয় তাহলে কী করবে বিসিবি! জানা গেছে এই সফর না হলে সবার আগে ঢাকা লীগ মাঠে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়াও ভাবনায় আছে একটি টি-টোয়েন্টি লীগ আয়োজনেরও। এ বিষয়ে বিসিবি’র পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাঈল হায়দার মল্লিক দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কাকে জবাব দিয়েছি। তাদের উত্তরের অপেক্ষায় আছি। যদি শেষ পর্যন্ত তারা এমন কঠিন অবস্থান ধরে রাখে আমরা খেলবো না। তা হলে আমরা বসেও থাকবো না। আমাদের ভাবনায় আছে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ শেষ করা। এছাড়াও চাইছি নিজেদের মধ্যে একটি টি-টোয়েন্টি লীগের আয়োজন করতে।’ শ্রীলঙ্কা সফর শেষ পর্যন্ত না হলে বিসিবি ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করবে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানও। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছিল হয়তো বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ (বিসিএল) আয়োজন হতে পারে। তবে ইসমাঈল হায়দার মল্লিকের কথায় স্পষ্ট ঢাকা লীগ আয়োজন করাই বিসিবি’র লক্ষ্য। কারণ এই সময় দেশের সব তারকা ক্রিকেটারদের ক্লাবগুলো খেলাতে পারবে। কোনো দলই দুর্বল থাকবে না। লঙ্কায় টেস্ট খেলতে গেলে দেশের তারকা ক্রিকেটারদের পাবে না ক্লাবগুলো। শুধু তাই নয়, তখন এইচপি দলের হয়ে দেশের প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটাররাও লঙ্কা সফরে থাকবে। তাই তাদেরও পাওয়া যাবে না। যে কারণে ক্লাবগুলো সেরা ক্রিকেটার ছাড়া খেলতেই রাজি হবে না। মল্লিক বলেন, ‘আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে ঢাকা লীগ অন্যতম আসর। যদি শ্রীলঙ্কা না যাওয়া হয় তাহলে সেটি আমরা আগে আয়োজন করার চেষ্টা করবো। আর টি-টোয়েন্টি লীগ যদি করি সেটি হয়তো চারটি দল নিয়ে। বলা যেতে পারে করপোরেট লীগের মতো করে একটি আসর হতে পারে।’ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) এই বছর আয়োজনের সুযোগ দেখছেন না ইসমাঈল হায়দার। এমনকি বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কা সফরে না গেলেও বিপিএল আয়োজন কঠিন বলেই তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘বিপিএল নিয়ে ভাবা খুব কঠিন। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি ভালো হলেই বিপিএল আয়োজনে মন দিবো। এছাড়াও আমাদের আন্তর্জাতিক
ক্রিকেট খেলার বিষয়টিও ভাবতে হবে। শ্রীলঙ্কা সফর না হলেও বিপিএল আয়োজন কঠিন। এর অন্যতম কারণ এই বছর আয়োজন করতে হলে দলগুলো মন মতো বিদেশি ক্রিকেটার আনতে পারবে না। এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনে অনেক কিছুই করা সম্ভব হবে না।’ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের ক্রিকেট স্থগিত রয়েছে। করোনা মহামারির কারণে একের পর এক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচি বাতিল হয়েছে। যা বিসিবি পুনরায় আয়োজনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে আসছে নানা বাধা। যেটির বড় প্রমাণ শ্রীলঙ্কায় টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপ খেলতে যাওয়ার মিশনে প্রতিবন্ধকতা। জানা গেছে, বিসিবি কঠিন অবস্থানে যাওয়ায় লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড ও সরকার কিছুটা নমনীয় হওয়ার কথা ভাবছে। এরই মধ্যে তারা আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে। তবে কতটা নমনীয় হবে সেটির উপর নির্ভর করছে সিরিজের ভাগ্য। আর সেটি না হলে ঘরোয়া ক্রিকেট নির্ভরই থাকতে হবে টাইগারদের।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *