লিবিয়ায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত দুই পক্ষ

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় পাঁচদিনের আলোচনার পর লিবিয়ার বিবদমান দুই পক্ষ স্থায়ী একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ত্রিপোলির আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকার ও তাদের বিরোধী পক্ষের সামরিক নেতাদের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করেছে। খবর আল জাজিরা।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফানি উইলিয়ামস এ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে লিবিয়ার ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পট পরিবর্তন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত বাহিনী দেশটির শাসক কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই সেখানে সহিংসতা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। এ সহিংসতার কারণে দেশটির অসংখ্য বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। স্টেফানি উইলিয়ামস বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে লিবিয়ার ভেতরে-বাইরে শরণার্থী হয়ে থাকা অসংখ্য মানুষ তাদের বাড়িঘরে ফিরতে পারবেন।

জাতিসংঘের লিবিয়াবিষয়ক এ বিশেষ দূত জানান, চুক্তি অনুযায়ী সব দল যুদ্ধক্ষেত্রগুলো থেকে তাদের সৈন্য ও সামরিক ইউনিটগুলোকে ক্যাম্পে নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। সব পক্ষই লিবিয়ার ভূমিতে, আকাশে কিংবা জলে থাকা সব সৈন্য ও বিদেশী সেনাদের সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে সরিয়ে নেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিকতায় আগামী মাসে তিউনিসিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ত্রিপোলির গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ) ও খলিফা হাফতার নেতৃত্বাধীন লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে। জিএনএর নিয়ন্ত্রণে আছে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি ও এর আশপাশের এলাকা। খলিফা হাফতারের অনুগত বাহিনী বেনগাজি থেকে দেশটির পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। ত্রিপোলি সরকারের পক্ষে রয়েছে তুরস্ক, কাতার ও ইতালি। হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর।

এদিকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, এ চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব না-ও হতে পারে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির এ সিদ্ধান্ত উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে আসেনি। এটি এসেছে নিম্ন পর্যায় থেকে। এখন সময়ই বলে দেবে এটি কতদিন টিকবে।’

আফ্রিকার মধ্যে লিবিয়াতেই সবচেয়ে বেশি তেল ও গ্যাস মজুদ রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে হাফতারের অনুগত একটি সশস্ত্র দল দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি তেল ক্ষেত্র ঘেরাও করে রেখেছে। টার্মিনালগুলোয় গুদামজাত তেল বিক্রি করতে আগস্টে ওই ঘেরাও আংশিক তুলে নেয়া হলেও নতুন করে তেল উৎপাদন করতে দেয়া হয়নি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *