লকডাউনে ব্রিটিশ রিটেইলারদের লোকসান ২ হাজার ২০০ কোটি পাউন্ড

২০২০ সালে চলা টানা লকডাউনে যুক্তরাজ্যে অপরিহার্য নয় বা শৌখিন পণ্যের বাজারে ২ হাজার ২০০ কোটি পাউন্ডের মতো ক্ষতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল থেকে এসব সামগ্রীর দোকানপাট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর আবারো ব্যবসার সুযোগ পাচ্ছেন শৌখিন বা বিলাস পণ্য বিক্রেতারা। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

বিশ্বখ্যাত পোশাকের ব্র্যান্ড মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার এজন্য বেশ আয়োজন শুরু করেছে। তাদের দোকানগুলোয় ঢুকতেই ক্রেতারা দেখতে পেয়েছেন শুভকামনার বাণী। এছাড়া নারীদের সঠিক মাপের বক্ষবন্ধনী কেনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘কন্ট্যাক্ট-ফ্রি ব্রা ফিটিং’। দেশজুড়ে তাদের সব স্টোরে নারীদের জন্য নিয়োজিত থাকবেন কিছু কর্মী। যারা সামাজিক দূরত্ব ও যথাযথ সাবধানতা মেনে ক্রেতাদের শেখাবেন সঠিক পদ্ধতিতে অন্তর্বাসের মাপ নেয়ার উপায়। পরামর্শ দেবেন কোন ধরনের অন্তর্বাস ক্রেতার জন্য উপযুক্ত হবে সে সম্পর্কে। বর্তমান সময়ের জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে নানা ধরনের নতুন নকশা এনেছে মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার। এসব অন্তর্বাস যেন বাগানে বার্বিকিউ পার্টি থেকে শুরু করে বাড়িতে বসে কাজ করার জন্য আরামদায়ক হয়, সেটি মাথায় রাখা হয়েছে।

বিভিন্ন শৌখিন বা বিলাসদ্রব্য বা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকের জন্য নতুন নতুন অফার নিয়ে এসেছে। যেমন জন লুইস ১৯ এপ্রিল থেকে তাদের বিউটিসাইকেল সেবা চালু করছে। এর মাধ্যমে একজন গ্রাহক তাদের কেনা পাঁচটি সৌন্দর্যসামগ্রীর কৌটা বা প্যাকেট ফেরত দিলে পরবর্তী কেনাকাটায় ১০ পাউন্ড ছাড় পাবেন। এপ্রিলের শেষ নাগাদ এ সুযোগ থাকবে।

গ্যাপ প্লাস অ্যাপ দিয়ে কেনাকাটা করলে গ্রাহকরা সঙ্গে উপহার হিসেবে বুঝে পাচ্ছেন মাস্ক। এছাড়া আগামী সপ্তাহে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা বেশি করে খোলা থাকবে প্রাইমার্ক। অন্যান্য খুচরা বিক্রেতাও নানা মজার মজার কাজ করছেন গ্রাহকদের টানতে। যেমন রিভার আইল্যান্ড থেকে চলতি মাসে যারাই কেনাকাটা করবেন তারাই পাবেন ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ ছাড়ের একটি কুপন, যা তিনি পরবর্তী কেনাকাটায় ব্যবহার করতে পারবেন।

ফ্যাশন ও সৌন্দর্যবিষয়ক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান স্টাইলাসের হেড অব অ্যাডভাইজরি সাইসংগীত দাসওয়ানি বলেন, ক্রেতারা দীর্ঘদিন ধরেই ঘরে বসে কেনাকাটা করে ক্লান্ত। এবার তারা দেখেশুনে কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তৈরি হয়ে, পোশাক পরে বাড়ির বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন তারা। সেটিও কম বড় কথা নয়।

বেশির ভাগ দোকানই ট্রায়াল রুম বা ফিটিং রুম ক্রেতাদের জন্য খুলে দিচ্ছে। অবশ্য মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার ও প্রাইমার্ক আগামী সপ্তাহেই তাদের ট্রায়াল রুম খুলছে না। তারা পরিস্থিতি কিছুটা পর্যবেক্ষণ করে তারপর হয়তো এ সিদ্ধান্ত নেবে।

তবে বাইরে গিয়ে কেনাকাটার সুযোগ পেলেও স্বাস্থ্যবিধি বা বিধিনিষেধগুলো সবাইকে মেনে চলতে হবে। যেমন মাস্ক পরতে হবে, কেনাকাটার জন্য কেবল একজন বের হতে পারবেন। কেনাকাটার সময় বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে কেনাকাটা সারতে হবে ব্রিটিশ ক্রেতাদের।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দোকানগুলোও নিজস্ব কিছু ব্যবস্থাপনা চালু করছে। যেমন জন লুইস স্পর্শবিহীন কেনাকাটার সীমা বাড়িয়েছে। মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের স্টোর ডিরেক্টর হেলেন মিলফোর্ড বলেন, তিনি আশা করছেন অনলাইনে ক্রেতার সংখ্যা কমবে না। তবে অনলাইন ক্রেতাদের কেউ কেউ হয়তো সরাসরি দোকানে এসে দেখে বেছে কিনতে পছন্দ করবেন। তিনি বলেন, পুরো বিষয়টাই মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করবে। আমার মনে হয়, এবার আমরা অনলাইন ও অফলাইন কেনাকাটার একটি মিশ্রণ দেখতে পাব।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *