বেচাকেনা উদ্বোধন হলেও জমেনি কানসাটের আম বাজার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর আম পাড়ার সময়সীমা বেঁধে না দেওয়া হলেও অপরিপক্ব আম পাড়া ও বাজারজাতকরণে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। করোনা পরিস্থিতির কারণে আম বেচাকেনায় উদ্বুদ্ধ করতে এবং অন্য জেলার অপরিপক্ব আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বলে বদনাম হওয়ার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথমবার মঙ্গলবার (২ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে আম পাড়া, বাজারজাতকরণ ও পরিবহন।

কানসাট আমবাজার চত্বরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলার আম পাড়া, পরিবহন ও বাজারজাতকরণের উদ্বোধন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল।

কিন্তু উদ্বোধনের পরদিন দেশের বৃহত্তম কানসাট আমবাজারটি আম শূন্য লক্ষ্য করা গেছে।মহাসড়কের পাশে ৩টি ভ্যানে প্রায় ২০ মণ আম বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কৃষকরা জানায়, বাজার জমজমাট না হওয়ায় সীমিত আকারে গুটি জাতের গোপালভোগসহ কয়েকটি জাতের আম পরিপক্ব হওয়ায় পাড়া শুরু হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ জানায় খিরসাপাত ও ল্যাংড়া জাতের আম উঠতে এখনও দেরি আছে। আশা করা হচ্ছে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়াসহ অন্যান্য আম ওঠলে কানসাট বাজারে কেনাবেচা জমে ওঠবে। 

এদিকে করোনার কারণে কানসাটের অধিকাংশ আড়ত এখনও প্রস্তুত হয়নি আম কেনাবেচার জন্য।অনেক আড়তে আবার মেরামতের কাজ করতে দেখা গেছে।

সাহাপাড়া এলাকার আম বিক্রেতা শহিদ জানান, তিনি কানসাটের আমবাজার উদ্বোধনের খবর পেয়ে বুধবার ১০ মণ আম এনেছিলেন।কিন্তু বাজার আম শূন্য দেখে হতাশ। তিনি তার আমগুলো দুই হাজার ৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেন।
অন্যদিকে চককীর্ত্তি এলাকার আমচাষি জাহাঙ্গির আলম বিশ্বাস জানান, তিনি কানসাট আম বাজরের পরিবেশ দেখার জন্য এসেছেন।জেলার বাইরের ক্রেতা না থাকায় এবং আড়ৎগুলো এখনও সচল না হওয়ায় তিনি আম পাড়ার সিদ্ধান্ত এখনও নেননি।

আর ঢাকার বাদামতলি এলাকার এক আম ক্রেতা জানান, এবছর করোনার কারণে তারা ২ জন এসেছেন আম কিনতে।কিন্তু গত বছর তারা একসঙ্গে ১০ জন এসেছিলেন আম কেনার জন্য। 

কানসাট হাট ও বাজারের লিজ গ্রহীতাদের অন্যতম অংশীদার ও কানসাট হাট ও আম বাজার কমিটির সহ সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বাবু ক্ষোভের সঙ্গে জানান, প্রায় আড়াই কোটি টাকায় কেনা হাটটিতে এ বছর আমের বাজার ঠিকমত না লাগলে এবং বর্তমান অবস্থা বিরাজ করলে পুঁজি হারিয়ে তাদের পথে বসতে হবে।

এদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম আমিনুজ্জান রতন আম বাজার জমে না ওঠার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অতিবৃষ্টির কারণে এ বছর দেরিতে আম পরিপক্ব হয়েছে। আমের উৎপাদন কম হওয়ার পাশাপাশি করোনার প্রতিকূল পরিবেশের কারণে সাময়িক এ সমস্যা হয়েছে।তবে আগামী সপ্তাহে এ সমস্যা কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জেলার অন্যান্য বাজার সদর উপজেলার তোহাবাজার, গোমস্তাপুরের রহনপুর এবং ভোলাহাটের আম বাজারেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।

জানা যায়, এ বছর আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *