চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টেলিভিশনের জন্যও তুমুল জনপ্রিয় কয়েকটি সিরিয়াল নির্মাণ করেছিলেন বাসু চ্যাটার্জি। দুদিন আগে প্রয়াত হয়েছেন ভারতের এ গুণী নির্মাতা। তিনি যখন মুম্বাইয়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন, তখন টেলিভিশনে তার নির্মাণ করা সিরিজ ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ প্রচারিত হচ্ছে। ১৯৯৩-৯৭ সময়ে সিরিজটি দূরদর্শনে প্রচারিত হয়েছিল। লকডাউনে সিরিজটি আবার প্রচার করা হচ্ছে। ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ ছাড়া বাসুর নির্মাণ করা আরো একটি জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ছিল ‘রজনি’।
বাসু চ্যাটার্জির ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ সিরিয়ালে সত্যান্বেষীর ভূমিকায় অভিনয় করেন রজিত কাপুর, আর অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে কেকে রায়না। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা করা ৩২টি কাহিনীকে ধরে টেলিভিশনে ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ ধারাবাহিক নির্মাণ করেন তিনি।
‘ব্যোমকেশ বক্সী’ ধারাবাহিকের ইনডোর শুটিং হয়েছিল মুম্বাইয়ে, আর বহির্দৃশ্য ধারণ করা হয় কলকাতায়।
১৯৬০-৮০ দশকের মধ্যে বাসু চ্যাটার্জি তার কাজে ভারতের মধ্যবিত্তের জীবনকে তুলে এনেছেন। ব্যোমকেশও সে গোত্রের মানুষ।
ধারাবাহিকের কিছু কিছু পর্বে সহ-অভিনেতা দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন বাসু। যেমন এক পর্বে এনেছিলেন রবি ঘোষকে আবার আরেকটি পর্বে দেখা গিয়েছিল উত্পল দত্তকে।
৪০ মিনিটের একেকটি পর্বে দর্শকরা দেখতে পান টান টান উত্তেজনায় ভরা নিরেট কাহিনী। বাগাড়ম্বর করে সময় কাটানোর কোনো সুযোগ রাখেননি নির্মাতা। অনেকে বলেন, ১৯৬০-এর দশকে বিবিসির টেলিভিশন সিরিজ শার্লক হোমসের সঙ্গে তুলনীয় ভারতীয় কাজ হচ্ছে বাসু চ্যাটার্জির ‘ব্যোমকেশ বক্সী’। অনেকে বলেন, বাংলায় এই গোয়েন্দাকে পুরো ভারতের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
দূরদর্শনের একটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘দর্পণ’-এর পরিচালক ছিলেন বাসু চ্যাটার্জি। এখানেও মধ্যবিত্তের জীবনগাথা ফুটে উঠতে দেখা যায়। পরে ২০০৫ সালে ‘এক প্রেম কথা-এক মুলাকাত’ ধারাবাহিকের পরিচালকও ছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়।