বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সম্পর্কে ভিন্ন গুরুত্বের আলোচনা আজ

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য আছে ট্রেড অ্যান্ড বাণিজ্য কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা) শীর্ষক ফোরাম। তবে অর্থনৈতিক সম্পর্কে বড় পরিসরে আরো ভিন্ন মাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিতে আলোচনার বসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে দুই দেশের সরকার। এজন্য অর্থনৈতিক সম্পর্কে ভিন্ন গুরুত্বের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে আজ। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা আরো বৃদ্ধির অংশ হিসেবে দুই দেশের সরকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিবিড় করতে অতিরিক্ত পথ চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে মার্কিন পণ্য ও সেবার জন্য বৃহৎ জনগোষ্ঠী, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বড় মধ্যবিত্ত শ্রেণীসহ ব্যাপক বাজার সম্ভাবনা দেখছে। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাও রয়েছে। দুই দেশের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা হতে হবে। অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিতে আমাদের অভিন্ন দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়ন প্রয়োজন। এ ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার দুই দেশের সরকারি দলের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব থাকবেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স-সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি ফর স্টেট কিথ ক্রাচ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিতে তারা আলোচনা করবেন উল্লেখ করে দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দলে থাকবেন পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, পরিবহন, কৃষি, ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভসহ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আরো কিছু অংশের প্রতিনিধিরা। অন্যদিকে বাংলাদেশের দলে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, কৃষি, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা। আলোচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে থাকবে দুই দেশের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করা। বিশেষ করে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী (কভিড-১৯) প্রেক্ষাপটে জনস্বাস্থ্য সহযোগিতা শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হবে। কৃষি, নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল নীতি, আইসিটি, ব্লু ইকোনমি, জ্বালানি, রেল-সড়কসহ অন্যান্য কানেক্টিভিটি বা সংযোগ বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হবে। আর দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের আন্তঃসংস্থা আলোচনা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। এরই মধ্যে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার একটি অর্থনৈতিক ফোরাম আছে। বছরে একবার টিকফা আলোচনা হয়। সর্বশেষ গত মার্চে যা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তা বলেছেন, আলোচনাটি টিকফার বদলে নয়, এর ভিন্ন গুরুত্ব রয়েছে। টিকফা কিছু নির্দিষ্ট বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে। এ সপ্তাহের অর্থনৈতিক আলোচনাটি কিছু কার্যকর বাস্তবতার ওপর গুরুত্ব দেবে, যা আরো বড় পরিসরে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেবে। দুই পক্ষই সুনির্দিষ্ট কিছু বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয় আগামী টিকফা সভায় অব্যাহত রাখার বিষয়েও সম্মত হতে পারে। আলোচনার আগে বা পরে কিছু ঘোষণা আসতে পারে বলেও প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *