বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি গতিশীল পররাষ্ট্রনীতি হিসেবে স্বীকৃত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আদর্শগতভাবে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত অবিচল, কিন্তু একই সঙ্গে দেশের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বাস্তববাদী। এজন্য তিনি সর্বজনীন মূল্যবোধ ও নীতির ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলেতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের যৌথ উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

ওয়েবিনারটির প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক ও লেখক সলীল ত্রিপাঠি, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার অনারপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনিয়র কূটনীতিক থমাস এ ডাইন এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল এর বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানটিতে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। প্যানেল আলোচনা পর্বের সঞ্চালক ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ইনস্টিটিউট ফর সাউথ এশিয়া স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. সঞ্চিতা বি. সাক্সেনা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ এ আদর্শই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি এবং এ অনুযায়ীই ভবিষ্যতে পরিচালিত হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি গতিশীল পররাষ্ট্রনীতি হিসেবে স্বীকৃত, বিশ্বাঙ্গনে যার রয়েছে নিরপেক্ষতার খ্যাতি এবং উচ্চনৈতিক অবস্থান আর এ কারণেই অত্যন্ত স্বল্পসময়ের মধ্যে বিশ্বের প্রায় সব দেশের স্বীকৃতি অর্জন করতে পেরেছিল বাংলাদেশ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে রাবাব ফাতিমা বলেন, বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিভঙ্গি ও আদর্শ যা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তার প্রথম বাংলায় ভাষণে প্রতিভাত হয়েছিল, তা অনুসরণ করেই বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে।

এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের উদাহরণ টেনে তিনি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

সলীল ত্রিপাঠি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা, যার শিকড় নিহিত ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে। জাতির পিতার এ ধারণা আজকের পৃথিবীতে বড়ই প্রাসঙ্গিক মর্মে মন্তব্য করেন ত্রিপাঠি। জাতির পিতা যেসব আদর্শ রেখে গেছেন, তা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান এবং উদাহরণ হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের সম্মানজনক পুনর্বাসনে যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা উল্লেখ করেন। সলীল ত্রিপাঠি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘দ্য কর্নেল হু উড নট রিপেন্ট: দ্য বাংলাদেশ ওয়ার অ্যান্ড ইটজ আনকোয়ায়েট লিগ্যাসি’ শীর্ষক বইয়ের লেখক।

প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্য আলোচকরা। ওয়েবিনারটিতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ, কূটনীতিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *