প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানি হবে: খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি কেউ চালের মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করে, তাহলে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

গতকাল ‘বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা’ শীর্ষক সভায় মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। সভার সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির দুজন করে প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

চালকল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী গুদামে চাল সরবরাহ করেন। যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায় না, গেলে মিলারদের লস হবে এবং যেসব কৃষক ধান ধরে রেখেছেন তারাও লোকসান করবেন। এ সময় যেসব মিল এগিয়ে আসবে তাদেরকে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করতে এরই মধ্যে অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেসব মিলকে পরবর্তী সময়ে সেভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, করোনাকালে সবাই বিপদগ্রস্ত। এবার না হয় লাভ একটু কম করলেন। প্রত্যেকবার লাভ সমান হয় না। এবার মানুষকে সেবা করার সুযোগ রয়েছে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন।

২০১৭ সালের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিল মালিকদের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে হাওড়ে বন্যার সময় সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির ওপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল। ফলে ৪০ লাখ টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। সে কারণে সেই বছর মিল মালিক এবং কৃষক উভয় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কৃষক বাঁচলে ধান উৎপাদিত হবে এবং আপনারা চালকল মালিকরা বেঁচে থাকবেন। কৃষক যাতে বিপাকে না পড়েন, বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক যেন ধানের ন্যায্যমূল্য পান, সেজন্য এবার আট লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মিল গেট থেকে কোন ধান কত দামে বিক্রি হচ্ছে তা যাচাই এবং মনিটরিংয়ের জন্য উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি।

সঠিক সময়ে চাল সরবরাহের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক একটা সিলিং করে নেন, কখন, কী পরিমাণ চাল সরকারি খাদ্যগুদামে সরবরাহ করবেন। সরকার সব ব্যবসায়ীকে প্রণোদনা দিচ্ছে, অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *