পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজ পাচ্ছে কোরিয়ান কোম্পানি

পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণকাজ শেষে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায় কার্যক্রম পরিচালনায় কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কাপোরেশনকে (কেইসি) নিয়োগ দিচ্ছে সরকার। রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে এবং জনস্বার্থে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১২তম সভা এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৮তম সভায় এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আলোচনায় যে দুটি প্রস্তাব এসেছিল তা নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের লক্ষ্যে জিটুজি ভিত্তিতে সার্ভিস প্রভাইডার নিয়োগের সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে (কেইসি) অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কেইসি কোরিয়ার অলমোস্ট সব টোল ম্যানেজ করে। আমরা টোল ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে রয়েছি, যদি এদের আমরা পাই, তাহলে টোল ব্যবস্থাপনায় একটা মাইলফলক সৃষ্টি হবে। সেজন্য জাতীয় স্বার্থে আমরা এ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে এবং জনস্বার্থে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে কেইসিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর সব দেশে ঘর থেকে বের হলে কোনো না কোনোভাবে সরকারকে টোল দিতে হয়। ব্রিজ, রাস্তাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও টোল দিতে হয়, যাতে করে এগুলো মেনটেইন করা যায়। আমাদের দেশের এ ব্যবস্থা এখনো চালু করতে পারিনি। যেসব ক্ষেত্রে চালু রয়েছে সেগুলো ম্যানুয়ালি। তাই মানুষজন অনেক কষ্ট পায়। সেগুলো এখনো আমরা অটোমেশন করতে পারিনি।

সভায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় আড়িয়াল খঁ নদীতীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাব শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ প্রস্তাব আমরা সরাসরি অনুুমোদন দিতে পারিনি। তবে শর্ত সাপেক্ষে তাদের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রথম শর্ত হচ্ছে, একনেকে যে প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা বাড়ানো যাবে না। তাছাড়া সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কোনো ক্রয় প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগে সে অনুমোদনও নিতে হবে। এ দুটি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

করোনার টিকার জন্য আলাদা অর্থ রাখা হয়েছে বলে জানান আ হ ম মুস্তফা কামাল। টিকার জন্য একটি সোর্সের ওপর নির্ভর না করে একাধিক সোর্স থেকে টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানান তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে অগ্রিম অর্থ দিয়েছে। অক্সফোর্ড এরই মধ্যে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। আমরা যদি সরাসরি অক্সফোর্ডে সম্পৃক্ত হতে না পারি তাহলে ভারতের কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারি। অন্য সোর্স থেকে চেষ্টা করতে হবে, যেখান থেকে পাব সেখান থেকেই আমাদের ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে হবে। রাশিয়া টিকা প্রয়োগ করেছে। যারাই টিকা তৈরি করে, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করব।

ক্রয় কমিটিতে দুটি প্রস্তাব অনুমোদন: বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভার পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন প্রকল্পের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে চুক্তিবদ্ধ ৫ লাখ ৫০ হাজার টনের দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগ গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *