দ্রুততম মানব-মানবী ইসমাইল-শিরিন

সবশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও দ্রুততম মানব-মানবী হয়েছিলেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মোহাম্মদ ইসমাইল ও শিরিন আক্তার। বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসেও তাদের শ্রেষ্ঠত্বে কেউ ভাগ বসাতে পারেনি। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ট্র্যাকে পুরুষ বিভাগের ১০০ মিটারে ১০ দশমিক ৫০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন ইসমাইল। নৌবাহিনীর আব্দুল রউফ (১০ দশমিক ৬০ সেকেন্ড) রুপা ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নাইম ইসলাম (১০ দশমিক ৭০ সেকেন্ড) ব্রোঞ্জ পেয়েছেন। মেয়েদের বিভাগে ১১ দশমিক ৬০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন শিরিন। এই ইভেন্টে শিরিনের সেনাবাহিনীর সতীর্থ শরীফা খাতুন (১১ দশমিক ৭০ সেকেন্ড) রুপা ও বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) সোনিয়া আক্তার (১২ দশমিক ১০ সেকেন্ড) ব্রোঞ্জ পেয়েছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ইসমাইল ১০ দশমিক ৫৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হয়েছিলেন। সেই টাইমিং ছাপিয়ে এবার দৌড় শেষ করেছেন ১০.৫০ সেকেন্ডে। এটাকে উন্নতি মানতে নারাজ এই স্প্রিন্টার।
এর কারণ হিসেবে করোনাকালীন সময়ে অনুশীলনের ঘাটতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার কারণে নিয়মিত অনুশীলন করতে পারি না। মাঝেমধ্যে মাঠে আসতে পারি; মাঝেমধ্যে পারি না। রুটিন কাজ থাকে। করোনা মহামারি শেষ হলে আশা করি আপনারা আমার ভালো একটা টাইমিং দেখতে পাবেন। এখন স্বর্ণপদক পেয়েছি, এটাই শুকরিয়া।’ টানা চতুর্থবারের মতো দেশের দ্রুততম মানব হয়ে নিজের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে ইসমাইল বলেন, ‘ভালো করার জন্য লংটার্ম ট্রেনিং করা দরকার। আমাকে যদি আপনি এখন অলিম্পিকে নামিয়ে দেন, আমি তো দৌড়ে কিছুই করতে পারবো না। তাই অলিম্পিকে যাওয়ার আগে আমাকে ট্রেনিংয়ের ফ্যাসিলিটিজ দেয়া উচিত। আর অলিম্পিকের মাত্র ছয় মাস আছে, ছয় মাস আমাকে ট্রেনিংয়ের ফ্যাসিলিটিজ দেয়া হোক, আশা করি টাইমিংটা ভালো হবে।’
২০১৩ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমসে নাজমুন নাহার বিউটির সঙ্গে ফটো ফিনিশিংয়ে স্বর্ণ হারিয়েছিলেন শিরিন। এরপর থেকে সামার ও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ মিলিয়ে ১২ বার দেশসেরা হয়েছেন এই স্প্রিন্টার। বাংলাদেশ গেমসে স্বর্ণ জিতেছেন প্রথম বারের মতো। তাই এই স্বর্ণটা একটু আলাদা জানিয়ে শিরিন বলেন, ‘অনুভূতির কথা যদি জিজ্ঞেস করেন এটা প্রকাশ করার মতো কিছু নেই। এটা অনুভব করার। তো আমি খুব ভালো অনুভব করছি। কারণ এটা আমার প্রথম বাংলাদেশ গেমসে গোল্ড পাওয়া। এর আগে অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে বিউটি আপার কাছে দ্বিতীয় হয়েছিলাম।’ টানা বারোটি আসরে স্বর্ণ জেতাকে রেকর্ড জানিয়ে এই স্প্রিন্টার বলেন, ‘আমি টানা ১২ বার দ্রুততম মানবী হয়েছি-এটাই রেকর্ড বাংলাদেশের।’ এদিকে ১০০ মিটার হার্ডলসে দৌড় শেষ করতে পারেননি সুমিতা রানী।
জাতীয় ও সামার অ্যাথলেটিক মিলিয়ে ১৫ বার স্বর্ণ জেতা এই কৃতী নারী হার্ডলার ট্র্যাকে পড়ে গিয়ে ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন। দুই হাত, হাঁটু ও মুখ ছিলে গেছে। মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। সেখানে চিকিৎসা দেয়ার পর বকশিবাজারে বাংলাদেশ জেলের ক্যাম্পে রাখা হয়েছে সুমিতাকে। এই ইভেন্টে সোনা জিতেছেন তামান্না। ১১০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণ জিতেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন নৌবাহিনীর এম মাসুদ খান।
১৪.৮০ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণপদক জিতে ট্র্যাক থেকে অবসরের ঘোষণা দেন এই হার্ডলার। এই ইভেন্টে ১৪.৯০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেনাবাহিনীর মির্জা হাসান রৌপ্য এবং ১৫.২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জপদক জেতেন নৌবাহিনীর সাইদ আহমেদ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *