ঠাকুরগাঁওয়ে কমলা চাষে সফল জুয়েল

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উদ্যোক্তা জুয়েল। স্বাদে, আকারে ও রঙে অতুলনীয় দার্জিলিং জাতের এই কমলা। গোটা বাগানজুড়ে প্রতিটি গাছে ২- ৫ মণ করে কমলা দেখা যাচ্ছে। স্বাদে মিষ্টি আর মিলছে কমলার আসল ঘ্রাণ। এর মধ্যে তার কমলা চাষের সাফল্যের কথা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র এলাকায়। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মানুষ দেখতে আসছে কমলা বাগান। সেই সাথে কিনছেন সরাসরি গাছ থেকে তোলা কমলা।

[৩] আবু জাহিদ জুয়েল বলেন, ২০১১ সালের দিকে আমি ঠাকুরগাঁও বিএডিসি অফিসে যাই বিজের চেক নেওয়ার জন্য। পাশে হার্টিকালচার সেন্টার থেকে আসার পথে ৫০টি দার্জিলিং প্রজাতির চারা সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। চারাগুলো যত্নসহকারে উপজেলার মালঞ্চা এবং বীরহলি গ্রামে আমার খালি জায়গায় রোপণ করি। গাছগুলো দুই বছরের মাথায় বড় হয়ে ফুল আসা শুরু করে। দেখে আমার অনেক আগ্রহ তৈরি হয়। ডিডি সাহেব আমাকে সে সময় বেশ কিছু গাছ প্রদান করে বলেন, আপনি তো গাছ অনেক পছন্দ করেন তাই এ গাছগুলো আপনার সংগ্রহে রেখে চেষ্টা করে দেখেন। যদি সফল হতে পারেন। আমার একটা বিশ্বাস তৈরি হয় আমি পারব। এর সাথে আমি দাজিলিং যাই একাধিকবার। যেহেতু কমলার চারাগুলো দাজিলিং থেকে নিয়ে আসা। সেখানকার শীত, মাটি, আবহাওয়া খুব পর্যবেক্ষণ করি এবং করণীয় ঠিক করে ফেলি। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং আমেরিকার গেলে আমি সেখানকার কমলা বাগান দেখতে যাই এবং খুটিনাটি জ্ঞান নেওয়ার চেষ্টা করি। দেশে ফিরে আরো দুই জাতের কমলার চারা ঢাকা থেকে সংগ্রহ করি। যার একটি অস্ট্রেলিয়ার অপরটি চাইনিজ কমলার চারা। ৮/৯ বছর ধরে এর পেছনে লেগে থেকে আমি কমলা চাষের পদ্ধতি ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলেছি। গতবার কমলা বিক্রি করেন প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি অনেক কৃষকরাই এই কমলা চাষে আগ্রহী প্রকাশ করেন। বর্তমানে ২ বিঘা ২৫ শতক জমিতে ২৫০টি কমলা গাছ আছে। আরও নতুন চারা রোপন করার কাজ চলছে।

[৪] তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন দিনাজপুর হার্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। তিন জাতের কমলা গাছে এখন ফল আসছে। আমার কমলা গাছের কমলার রং, আকার এবং মিষ্টত্ব যেকোনো দেশ থেকে আমদানি করা কমলার চেয়ে উন্নত বলে আমি মনে করি। দার্জিলিং এর মাটির সাথে এ অঞ্চলের মাটির বেশ মিল রয়েছে সেই সাথে এ অঞ্চল একই অববাহিকায় হওয়ার দার্জিলিং জাতের এই কমলা চাষাবাদে এ ভূমি উর্বর। এই অঞ্চলে কমলা চাষ কৃষি অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে বলে মনে করেন তিনি। একটি গাছে ৪ থেকে ৭ শ কমলা যা প্রায় ১ থেকে ৩ মণ। যার বাজারমূল্য অনেক। তবে তিনি আশা করছেন ২০০ টাকা কেজি হিসেবে চলতি মাসে ১০ তারিখে নিজের বাগান থেকে বিক্রি শুরু করবেন।

[৫] পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা বলেন, হিমালয়ের পাদদেশে ঠাকুরগাঁও এর অবস্থান হওয়ায় ভৌগলিক কারণে এ জেলায় পুষ্টিকর বিদেশী ফল কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে বানিজ্যিকভাবে মালটা চাষে কৃষক সফলতা পাবে। এবং কমলা চাষে উঁচু জমিতে চাষের উপযোগী হিসেবে মনের করেন। আমরা সব সময়ই কমলা চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *