ঘুরে দাঁড়ালেই সিরিজ বাংলাদেশের

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয়। মাত্র ৬০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল কিউইরা। পরের ম্যাচে সেই নিউজিল্যান্ডই কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় ব্যাটে-বলে। মাত্র ৪ রানে শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। কিন্তু পরের ম্যাচে ঠিক উল্টো চিত্র। ব্ল্যাকক্যাপসরা ঘুরে দাঁড়ায়। তাদের ছুড়ে দেয়া ১২৮ রান তুলতে ৫২ রানে হারে টাইগাররা। তার মানে স্পষ্ট দ্বিতীয়সারির কিউইদের ছোট করে দেখাই ছিল বড় ভুল।

কারণ সুযোগ পেয়েই জানান দিয়েছেন এ দেশের কন্ডিশন বুঝতে বেশি সময় লাগেনি। তাই তাদের আজ থামানো না গেলে বদলে যাবে সব হিসাবনিকাশ। তাই সিরিজ নিশ্চিত করতে আবারো ঘুরে দাঁড়াতে হবে। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে যে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রদর্শনী তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শেষ দুই ম্যাচ জিততে পারলে আইসিসির র‌্যাঙ্কিংয়ে টাইগাররা এগিয়ে যাবে আরও এক ধাপ। অস্ট্রেলিয়ার মতো এই চলতি সিরিজে আলোচনায় মিরপুরের উইকেট। আর সেই চ্যালেঞ্জটাই জিততে চায় দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান লিটন দাস। তিনি বলেন, ‘ব্যাটিং কন্ডিশন একটু তো চ্যালেঞ্জিং কারণ গত ৩টা ম্যাচেই দেখেন লো স্কোরিং ম্যাচ হয়েছে। তো আমরা না শুধু তাদের ব্যাটসম্যানরাও সাফার করতেছে। এটাতো চ্যালেঞ্জিং বিষয় কারণ টি-টোয়েন্টিতে সবসময় মাইন্ড সেটাপ থাকে বড় স্কোর করার বা স্ট্রাইক রেটটা মেইনটেইন করার। যেহেতু এ জিনিসটা হচ্ছে না গেমটা ওভাবে চেঞ্জ করতে হচ্ছে। কিন্তু এটা টাফ, এটা ইজি না যে টি-
টোয়েন্টি ক্রিকেটে এরকম উইকেটে ম্যানেজ করে নেয়া একটু কঠিন। কারণ প্রতিটি ব্যাটসম্যানই একটু আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকে।’
তৃতীয় ম্যাচে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টাইগাররা গুটিয়েছে মাত্র ৭০ রান করে। ১২৮ রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন ও নাঈম শেখ শুরুটা ভালোই করেছিল। তবে দুই অঙ্কে পৌঁছে দু’জনই বাজে শটে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছে। এরপর পরের ৮ ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কই স্পর্স করতে পারেনি। মাঝে শুধু মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ২০ রানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। দলের সিনিয়র সদস্য সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহরা আউট হয়েছে বাজে শটে। লক্ষ্য ছোট বলেই হয়তো বেশি আক্রমণাত্মক শট খেলতে গিয়েই বিলিয়ে দিয়েছেন জীবন। তবে লিটন মনে করেন এখানে উইকটটাই বড় সমস্যার মূল। যতটা ব্যাট করা সহজ মনে হচ্ছে ততোটা নয়। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে যে জিনিসটা মনে হয়, যেহেতু লো স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে তো স্কোর করাটা এত সহজ না। বাউন্ডারি মারাটা আরও কঠিন, ওভার বাউন্ডারি বা এমনি বাউন্ডারি মারাটাই অনেক কঠিন। আমার কাছে মনে হয় সিঙ্গেলে একটু বেশি ফোকাস দিতে হবে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটটা একটু বেশি ফোকাস দিতে হবে। আমার কাছে যেটা মনে হয় আমি আর নাইম শুরুটা ভালো দিয়েছিলাম, আমি যদি ওই জায়গাটায় আরেকটু সেন্সিটিভ ক্রিকেট খেলতে পারতাম, আরেকটু দায়িত্ব নিতে পারতাম জিনিসটা সহজ হয়ে যেতো। কারণ দ্বিতীয় ম্যাচেও আমার ও নাইমের ভালো একটা জুটির কারণে পরের ব্যাটসম্যানরা সহজ ব্যাটিং করতে পেরেছে। এরকম সুযোগ আসলে পরের বার চেষ্টা করবো ইনিংসটা বড় করার জন্য।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ চতুর্থ ম্যাচে জিতলেই সিরিজ হবে বাংলাদেশের। সেই সঙ্গে র‌্যাঙ্কিংয়ে ঘটবে উন্নতি। দীর্ঘদিন টাইগারদের অবস্থান ছিল ১০ নম্বরে। টানা দুই ম্যাচ জিতেই উঠে এসেছে ৭ এ। শেষ দুটি ম্যাচ জিততে পারলে উঠবে পাঁচে। তবে শেষ হারের পর থেকেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত পারবে তো বাংলাদেশ! যদিও লিটন দাস এ হারের জন্য ক্লান্তি ও গরমকেও দায় দিয়েছেন। তবে একদিন বিশ্রামে ছিল দল। গতকাল অনুশীলনও করেছেন। আজ তারা ঘুরে দাঁড়াতেও প্রস্তুত। লিটন বলেন, ‘ফিটনেস তো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা যেখানে খেলতেছি এখানে প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া, নিজেকে ওভাবে মেইনটেইন করতে হচ্ছে। কারণ একদিন পরপর খেলা এ রকম গরমে। আমার কাছে যেটা মনে হয় বডি রেস্টটা খুব দরকার। কারণ এরকম গরমে পরপর অনুশীলন, ম্যাচ থাকলে এনার্জি লেভেলটা একটু ডাউন হয়ে যায়। এজন্য আমরা সবাই টি ওয়াইজ ফিটনেসে অনেক মনোযোগ দিচ্ছি, জিম করতেছি। কারণ স্ট্রেন্থ অনেক বেশি দরকার, আমার মনে হয় জিম থেকে এ জিনিসটা পাওয়া যায়।’ তৃতীয় ম্যাচে হারের পর একাদশে পরিবর্তনের গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। আজ টাইগাররা হয়তো একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামতে পারে। আজ একাদশে আসতে পারে সৌম্য সরকার।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *