গণমাধ্যম নিজস্ব পলিসি অনুযায়ী সংবাদ প্রকাশ করছে: কাদের

সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি, যা প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের গণমাধ্যম নিজস্ব পলিসি অনুযায়ী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। ভীতিকর কোনো পরিবেশ নেই। সরকারের সমালোচনা হচ্ছে। আপনারাও অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত গালিগালাজ করছেন। কারো ওপর কোনো চাপ নেই। সমালোচনা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করার সেই সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। কোনো গণমাধ্যমের ওপর সরকার সমালোচনার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে সেটা আপনারা পরিষ্কার করে বলেন।

গতকাল সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত নিজের সরকারির বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বলে বারবার পুরনো অভিযোগ করে চলছে। সরকার নাকি ভিন্নমত সইতে পারে না। এদেশের আওয়ামী লীগ পরমতসহিঞ্চুতা নিয়ে কাজ করছে। এজন্যই বিএনপি অনবরত মিথ্যাচার করতে পারছে। আমরা জানতে চাই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনবরত রাষ্ট্রবিরোধী প্রচার কি ভিন্নমত? নাকি রাষ্ট্রকে দুর্বল করা? রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করা, দিনরাত দেশে-বিদেশে বসে অবিরাম দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক বৈঠক, মিথ্যাচার আর গুজব ছড়ানো কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা?

বিএনপি সরকারের শাসনামলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্বের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই সময়ে সাংবাদিক হত্যার বিচার তো হয়নি। বিচারের নামে হত্যাকারীকে রক্ষা করা হয়েছে। তাদের মুখে মত প্রকাশের স্বাধীনার কথা আসলে ভূতের মুখে রাম নাম। ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিন মাসে ৫০ জন সাংবাদিক তাদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আজ যে উন্নয়ন-অর্জন তা শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশংসিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন বিশ্ব সমাজে সমীহ আদায় করা সম্ভাবনাময় দেশ। জনগণ এখন উন্নয়নমুখী। সবার চোখে-মুখে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়।

কাদের আরো বলেন, যেকোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্র জনগণ নস্যাৎ করে দেবে। বিএনপি কোনো ইস্যূ খুঁজে না পেয়ে নন ইস্যুকে ইস্যু বানানোর অপচেষ্টা করছে। কখনো কোটা আন্দোলন, কখনো কোটাবিরোধী আন্দোলনে ভর করে। সর্বশেষ ধর্ষণবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে ভর করে সরকারের পদত্যাগ চেয়েছিল, যা হালে পানি পায়নি। এবারো তারা ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতা থেকে তাদের কোনো শিক্ষা হয়নি।

রাজপথে আন্দোলন ঢেউ গড়ে তোলা হবে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা জানতে চাই, ফখরুল সাহেব যা বলেন তা নিজে বিশ্বাস করতে পারেন কিনা। আন্দোলনের ঢেউ তারা টেমস নদীর পাড় থেকে গুলশান অফিসে তুলতে পারেন। কিন্তু পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বিধৌত মুজিবের বাংলায় নয়। তাদের আন্দোলনের হাঁকডাক আষাঢ়ের আকাশের মতো সোস্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে যতটা গর্জে, বাস্তবে রাজপথে ততটা বর্ষে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র এক টাকার বাইসাইকেল নয়, এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ কাঠামো, সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *