মনিরুল ইসলাম : [২] কোভিড-১৯ সংত্রুমণ পরিস্থিতির কারণে জাতীয় সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনকে সামনে রেখে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। অধিবেশন স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ অনুসরণ করেই বসবে বলে সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
[৩] ইতোমধ্যে ৭ জন সংসদ সদস্য কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছেন। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাসহ নিরাপত্তায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর শতাধিক সদস্যও আত্রুান্ত হন। এ কারণেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোর ভাবে মানা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
[৪] সূ্ত্র জানায়, অধিবেশনে যোগদান রোষ্টার পদ্ধতিতে হচ্ছে। কে কোনদিন সংসদ চলাকালীন অধিবেশনে যোগ দিবেন তা চীফ হুইপ নূর- ই- আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে ৬ জন হুইপ কাজ করছেন। চলছে রোষ্টার তৈরির কাজ। এই সব রোষ্টারে যারা ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। যাদের সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-জ্বর রয়েছে তাদের রাখা হচ্ছে না। কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে সংসদ ভবন ও সংসদ অধিবেশন কক্ষ কেন্দ্রীয় ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। কাশি দিলে কেউ তা নিমিষেই ছড়িয়ে পড়বে। কেউ কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে এলে অন্যরা সহজেই আত্রুান্ত হতে পারেন। তাই এ ব্যাপারে বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হচ্ছে। তবে যারা শারীরিক ভাবে ফিট রয়েছেন, বয়সে তরুন তাদের যোগদানে অগ্রাধিকার রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ঘুরে ফিরে তারাই অধিবেশনে যোগ দিবেন।
[৫] সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঝুঁকি এড়াতে শারীরিকভাবে অসুস্থ ও বয়স্ক সংসদ সদস্যদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কোরাম পূর্ণ হওয়ার জন্য ৬০ জনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। তবে উপস্থিতি যাতে কোন ভাবেই তিন অংকে না পৌছায় সেদিকে সতর্ক থাকা হচ্ছে। অধিবেশন কক্ষের আসন বিন্যাসও আগের মতো থাকবে না। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশপাশের বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা রাখা হবে। সংসদ সদস্যরাও পাশের আসন ফাঁকা রেখেই বসবেন। অংশগ্রহণকারী সকলের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর সকলকে ডিসইসফেকশন চেম্বার দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। মূল ভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্যানারে তাপমাত্রা মেপে নিতে হবে।
[৬] কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। তবে সংসদ সচিবালয়ের প্রস্তুতিতে কোনও ঘাটতি থাকছে না। যেসব সংসদ সদস্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করবেন তিনি নিজ দায়িত্বে অধিবেশনে যোগ দিবেন। আমরা কাউকে মানা করছি না। করোনা উপসর্গ যাদের রয়েছে বলে মনে করবেন তাদের নিরুৎসাহিত করছি। সাথে প্রবীণ সদস্যদেরও নিরুৎসাহিত করছি। এর বেশি কিছু না।
[৭] এক প্রশ্নের জবাবে চীফ হুইপ বলেন, কোন সংসদ সদস্যকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে না। আমি বিশ্বাস যারা এলাকায় রয়েছেন তারা স্বউদ্যোগেই টেষ্ট করিয়েছেন। আমরা কাউকে বলছি না।
[৮] প্রসঙ্গত, আগামী ১১ জুন বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। এরআগে দিন ১০ জুন বিকেল ৫টায় চলতি সংসদের বাজেট) অধিবেশন শুরু হবে। এটি হবে একাদশ জাতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশন।