কোভিড মহামারির কারণে প্রায় ছয় মাস বন্ধ ছিল কাঁকড়া রপ্তানি। এতে লোকসান গুণতে হয়েছে চাষি ও ব্যবসায়ীদের। কিন্তু মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ফের শুরু হয়েছে কাঁকড়া রপ্তানি। চাঙ্গা হতে শুরু করেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রধান এ শিল্প।
জানা গেছে, কাঁকড়ার সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। কিন্তু দেশটিতে রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় দরপতন হয়েছে কাঁকড়ার। এতে লোকসানে পড়েছেন খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের প্রায় ২৫ হাজার খামারি। স্বাভাবিক সময়ে এ অঞ্চল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫ টন কাঁকড়া রফতানিকারকদের কাছে পাঠানো হতো। কিন্তু চীনে রপ্তানি বন্ধ থাকায় রফতানিকারকরাও কাঁকড়া কিনছেন না। এতে সময়মতো আহরণ না করায় খামারেই মরে যাচ্ছে অনেক কাঁকড়া।
রপ্তানিকারকরা জানান, চীনে কাঁকড়া রফতানির ক্ষেত্রে ঘেরের বর্ণনা, পানি, তাপমাত্রা, পরিবেশ, চাষির তথ্য, কাঁকড়ার মান যাচাই, স্বাস্থ্যসনদসহ বেশ কয়েকটি নতুন শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। জটিল এসব শর্ত মেনে কাঁকড়া রফতানি কঠিন হয়ে পড়েছে।
ডিজিটাল ব্যবসার নতুন ফাঁদ ই–ভ্যালি ! ≣ করোনাযুদ্ধের দেবদূতদের প্রতি ≣ [১] গার্মেন্টস মালিকদের এ কেমন অমানবিকতা!
খুলনার পাইকগাছা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি দেবব্রত দাস জানান, বড় আকারের কাঁকড়া (প্রতিটি ওজন প্রায় ২০০ গ্রাম) চলতি বছরের শুরুতে কেজিপ্রতি ১২০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা বর্তমানে ক্রেতা সংকটের কারণে ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে এ অঞ্চল থেকে কাঁকড়া রফতানি হয়েছে ১২৮.৫২ মেট্রিক টন। করোনার কারণে চীনে রফতানি বন্ধ হওয়ায় জানুয়ারি-মার্চে রপ্তানি কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৯৬ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ লাইভ অ্যান্ড চিল ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকার কাঁকড়া রপ্তানি হয়। তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে ধস নেমেছে এ খাতে।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, এখন কাঁকড়া রপ্তানিতে ঘেরের তথ্য যাচাই, খামারির পরিচিতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্যসনদসহ বেশ কয়েকটি নতুন শর্ত দিয়েছে চীন। রপ্তানিকারকরা এসব শর্ত নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা শর্ত পূরণ করতেও রাজি আছে। এ ক্ষেত্রে সরকার দ্রুত হস্তক্ষেপ করলেই রফতানিতে ফিরবে কাঁকড়া।