কেডিএস গ্রুপের রোষানলে সাবেক কর্মকর্তা

চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী গ্রুপ কেডিএসের রোষানলে পড়ে এক বছরে ২৬ মামলার আসামি হয়ে কারাগারে আছেন মুনির হোসেন খান। তিনি কেডিএস গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কেওয়াই স্টিল মিলের সাবেক পরিচালক ছিলেন। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মনির হোসেন খানের বাবা ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন খান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার ছেলে মুনির কেডিএস গ্রুপের মালিকানাধীন কেওয়াই স্টিল মিলের সাবেক নির্বাহী পরিচালক। কিন্তু চাকরি ছাড়ার পর গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক বছরের মধ্যে ২৬টি মামলার আসামি হয়ে এখন চট্টগ্রাম কারাগারে আছে। এমনকি মামলার আসামি করা হয়েছে আমাকে এবং আমার ছোট ছেলেকে। অথচ আমরা কখনো কেডিএসে জড়িত ছিলাম না।

মুনির ব্যাংক অব আমেরিকা ফ্লোরিডায় সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চাকরি করে। কিন্তু ২০০৭ সালে মুনিরের স্কুল বন্ধু কেডিএস গ্রুপের কেওয়াই স্টিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম রহমানের অনুরোধে দেশে এসে কেওয়াই স্টিল মিলের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দেয়। মুনির কেওয়াই স্টিলে যোগ দেয়ার সময় প্রতিষ্ঠানটির মূলধন ছিল ৩০০ কোটি টাকা, যা ২০১৮ সালে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায়। অল্প সময়ে কোম্পানির উন্নতির ফলে মুনিরকে নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে পেইড ডিরেক্টর করা হয়। এ প্রতিষ্ঠান শীর্ষস্থানীয় টিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে (মুরগি মার্কা ঢেউটিন) পরিণত হয়।

পরে জেলখানায় কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের দ্বিতীয় ছেলে ভারতীয় নাগরিক জিবরান তায়েবি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ইয়াসিন রহমান টিটুর হাতে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল কারাগারের ভেতরেই আমার ছেলে লাঞ্ছনার শিকার হলে বন্ধু সেলিম রহমানের নির্দেশেই ২০১৮ সালের ২০ জুন পদত্যাগপত্র মেইল, রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠায়। পরে বকেয়া বেতনের জন্য আবেদন করলেও কেডিএস গ্রুপ কোনো সাড়া দেয়নি।

ছেলের বিরুদ্ধে গত এক বছরে কেডিএস গ্রুপের ২৬টি মামলা দায়েরের কথা উল্লেখ করে মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেন, ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর প্রথমে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে একটি গাড়ি চুরির মামলা দেয় কেডিএস। এছাড়া বায়েজিদ থানায় পাঁচটি, ঢাকার গুলশান থানায় একটি এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৯টি মামলা দায়ের করে কেডিএস। বর্তমানে ১৯টি মামলায় জামিনে আছে মুনির। গাড়ি চুরির মামলা ছাড়া বাকি সব মামলার এজাহারে বর্ণিত অভিযোগ অভিন্ন। আমার ছেলেকে হয়রানি করার বিষয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশে আমেরিকান দূতাবাস তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৪ নভেম্বর দৈনিক বণিক বার্তার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘কারাগারেই ব্যবসায়িক সভা শিল্পপতির সাজাপ্রাপ্ত পুত্রের’ শিরোনামে সংবাদে মুনির হোসেনের বিষয়টি প্রকাশিত হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *