করোনাক্রান্ত ৯০%-ই হাসপাতালে যাননি, ওষুধ খেয়েছেন নিজের মতো

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৯০ শতাংশই নিজের ইচ্ছেমত বা কোথাও থেকে শুনে ওষুধ সেবন করেছেন। তারা হাসপাতালেও যাননি। এমন তথ্যই উঠে এসেছে এক গবেষণায়।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের (বিএইচডব্লিউ) ওয়েবনিয়ারে তিনটি গবেষণা পত্র উপস্থাপন করা হয়। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা ও খাদ্যাভ্যাস, নমুনা সংগ্রহ এবং কভিড মোকাবেলায় শুরুর দিকের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তাদের গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।

পপুলেশন কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ওবায়দুর রবের সঞ্চালনায় গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন মুনতাসির ফয়সাল, জাকির হোসেন ও পলাশ চন্দ্র বনিক।

মুনতাসির ফয়সাল তার গবেষণার তথ্য তুলে ধরে জানান, বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত ৯০ শতাংশ রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাননি। তারা বাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসময় নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ সেবন করেছেন।

‘নিজের ইচ্ছেমতো’ বলতে এ গবেষক ব্যাখ্যা করেন, তার আগে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে শুনে বা আত্মীয় স্বজনের পরামর্শের ওপর নির্ভর করা।

এছাড়া নিজের মতো ওষুধ সেবন করা এসব রোগী ওষুধের কোর্স শেষ করেননি। আর বাড়িতে চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে জনপ্রতি খরচ পড়েছে ২০ হাজার টাকার বেশি। নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে ১০ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।

করোনার জন্য সংগৃহীত নমুনা যথাযথভাবে সংগ্রহ করা হয়নি বলেও অপর এক গবেষণায় উঠে এসেছে। অনেক ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ বার পরীক্ষা করার পরও নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ ছিল অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা।

করোনাভাইরাসের মিউটেশন বদলের ফলে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তেমন একটা দেখা যায়নি বলে জাকির হোসেনের গবেষণায় জানানো হয়।

বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে জন চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালগুলো। একই সঙ্গে প্রথম দিকে রোগীরাও চিকিৎসা সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট হননি বলে পলাশ চন্দ্র বণিকের গবেষণায় উঠে এসেছে। এসময় কোয়ারেন্টিন বা সঙ্গনিরোধ এবং আইসোলেশন বা বিচ্ছিন্নকরণ শব্দ নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। এতে করে করোনায় সংক্রমিতদের সঠিকভাবে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিন করা যায়নি।

এ গুণগত (কোয়ালিটেটিভ) ও পরিমানগত (কোয়ান্টিটেটিভ) উপাত্তের ভিত্তিতে পরিচালিত গবেষণাগুলোর তথ্য এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে বেশ কিছু পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *