করোনাকালে দেশে ফিরেছেন ৪ লাখ ৮ হাজার প্রবাসী

বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর গত বছরের এপ্রিল থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৪ লাখ ৮ হাজার ৪০৮ জন প্রবাসী ফিরেছেন। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ৪৯ হাজার ৯২৪ জন। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এ তথ্য জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরুতেই প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, ফেরত আসা কর্মীদের মধ্যে যেমন কর্মহীন হয়ে পড়া রয়েছে তেমন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে স্বাভাবিকভাবে ফেরত আসা শ্রমিকও রয়েছেন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে সমস্যাগ্রস্ত কর্মীদের কর্মসংস্থান তথা পুনর্বাসনের জন্য সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্যও জাতীয় সংসদে তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, গন্তব্য দেশে সমস্যাগ্রস্ত কর্মীদের দেশে যেন ফেরত আসতে না হয় সে লক্ষ্যে আপত্কালীন আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে দূতাবাসের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

করোনার কারণে চাকরিচ্যুত বা অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদেশে প্রত্যাগত কর্মীদের এবং প্রবাসে করোনায় মৃত কর্মীর পরিবারের উপযুক্ত সদস্যকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিনিয়োগ ঋণ প্রদানের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। প্রত্যাগত কর্মীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকার থেকে ৫০০ কোটি টাকাসহ সর্বমোট ৭০০ কোটি টাকা ঋণ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মাত্র ৪ শতাংশ সুদে মোট ৭৭১ জনকে এবং ৫০০ কোটি টাকা থেকে পুরুষ কর্মীদের ৯ শতাংশ এবং মহিলা কর্মীদের জন্য ৭ শতাংশ সুদে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৩ জন বিদেশফেরত কর্মীকে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। দেশের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ৭১টি শাখার মাধ্যমে এ ঋণ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, আইওএমের সহায়তায় প্রত্যাগত বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য পৃথক ডাটাবেজ প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা থেকে দুজন করে সর্বমোট ১২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রত্যাগত কর্মীদের নিবন্ধনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া তাদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার বিভিন্ন এনজিওর সহায়তায় উন্নয়নের পাশাপাশি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে। ফেরত আসা এসব নারী কর্মীকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদেশে কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সি অফিস পরিচালনা সচল রাখা এবং কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করতে পারে, সে লক্ষ্যে তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয়। রিক্রুটিং এজেন্সির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ৫৩৪ রিক্রুটিং এজেন্সিকে এক বছরের জন্য জামানতের অর্থ বিনা সুদে ফেরত দেয়া হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *