এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা এরদোগানের

এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান। দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে এ বছরই আইন পাশের হুমকি দিয়েছেন তিনি। বুধবার তার দল একে পার্টির প্রাদেশিক নেতাদের সঙ্গে হওয়া এক ভিডিও কনফারেন্সে এ ঘোষণার কথা জানান এরদোগান। এ খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি ইউটিউবে এরদোগানের একটি ভিডিওতে ব্যাপক পরিমান ডিসলাইক পরতে শুরু করে। এরদোগানের বক্তব্যের সমালোচনা করা হলে দ্রুত তার কমেন্ট অপশনও বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া, টুইটারে ব্যবহারকারীদের মন্তব্যে হেনস্থা হতে হয়েছে এরদোগানের মেয়ে ও মেয়ের স্বামীকে। ধারণা করা হচ্ছে, এসবের প্রতিক্রিয়াতেই নিন্দুকদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছেন এরদোগান। এরদোগান জানিয়েছেন, যারা যারা টুইটারে তার মেয়ের পরিবারকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছে তাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চালু হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা কি এখনো বুঝতে পারছেন না কেনো আমরা ইউটিউব, টুইটার বা নেটফ্লিক্সের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে! আমরা এ ধরণের আচরণ সমূলে উৎপাটন করতে চাই।
এরপরই নতুন আইনের ঘোষণা দেন তিনি। জানান, তার সরকার যে নতুন আইন প্রণয়ন করবে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে বাধ্য করবে তুরস্কের আইনগতভাবে সক্রিয় থাকতে। অর্থাৎ, এ ধরণের কোনো হেনস্থার জন্য তারা আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়ি হবে এবং তুরস্কের আদালতের রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, তুরস্কের সরকার দেশটির ভিন্নমত পোষণকারীদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারি ব্যর্থতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা পোষ্ট করছেন তারা সরকারের টার্গেট হচ্ছেন। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী দলীয় নেতা হতে শুরু করে সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও আইনজীবীরাও সরকারের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন তুরস্কে।
এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বেশ কয়েকবার সাময়িক বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে তুরস্কে। এবার এরদোগান সরকার চাইছে, টুইটার, ফেসবুক ও ইউটিউবে যেসব পোস্ট বা ভিডিও সরকার চাইবে সেগুলো মুছে ফেলতে বাধ্য থাকবে এসব মাধ্যমগুলো। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এরদোগানের সময়ে তুরস্কের বাক স্বাধীনতা যেভাবে সংকুচিত হয়ে এসেছে নতুন এ আইন তা আরো সংকুচিত করে তুলবে। দেশটি এরইমধ্যে হাজার হাজার ওয়েবসাইট ব্লক করে রেখেছে। এমনকি উইকিপিডিয়াকেও হুমকি মনে করে প্রায় দুই বছর এটি নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল দেশটিতে। এ বছরের প্রথম দিকে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *