এখন মনে হচ্ছে অভিনয়ের পাশাপাশি অন্য কিছুও ভাবা উচিত ছিল

ছোটপর্দার দক্ষ অভিনেত্রী গোলাম ফরিদা ছন্দা। ২০০১ সালে ছন্দা নির্মাতা সতীর্থ রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। টাপুর-টুপুর নামে এ দম্পতির দুটি যমজ কন্যাসন্তান আছে। টাপুর-টুপুর তাদের বাবা সতীর্থ রহমানের রচনা ও পরিচালনায় ‘খোলস’ নাটকে অভিনয়ও করেছেন। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ছন্দার আকর্ষণ সেই শৈশব থেকেই। কারণ সাহিত্য ও দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি তার ছিল বিশেষ দুর্বলতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী থাকাকালীন তিনি মঞ্চের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এরপর পুরো দমে শুরু করেন অভিনয়। ছন্দা তার সমসাময়িক কাজ নিয়ে কথা বলেন বণিক বার্তার সঙ্গে। আলাপ করেছেন কুদরত উল্লাহ

দীর্ঘদিন ধরে মিডিয়ায় কাজ করছেন, এখন এসে অনুভূতিটা কেমন?

প্রথমে ভালোবাসা থেকে কাজ শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে এটাই প্রফেশন হয়ে উঠেছে। আর এখন তো অন্য কিছু ভাবতেই পারি না। কিন্তু এত বছর পর এসে এখন মনে হচ্ছে পাশাপাশি হয়তো অন্য কিছুও ভাবা উচিত ছিল। হয়তো মিডিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিই এমনটা ভাবাচ্ছে।

কভিড-১৯-এর সময়টাতে কী করেছেন?

একেবারে ঘরে আটকে ছিলাম। প্রথম চার-পাঁচ মাস তো ভুতুড়ে ভয় কাজ করছিল। পরে ধীরে ধীরে ঘরেই নানা রকম কাজ শুরু করেছিলাম। Chhonda’s rainbow inside নামে ইউটিউব চ্যানেল শুরু করেছিলাম, ঘরে বসে ওভিসির কাজ করেছি, ‘রূপসী নন্দিনী শাড়িতে নারী’ নামে একটা পেজ ওপেন করে অনলাইনে দেশীয় শাড়ি নিয়ে কাজ করেছি। এখনো করছি। কভিড আমাদের কাছ থেকে অনেক খানি সময় নিয়ে নিলেও দিয়েছেও অনেক কিছু।

বর্তমানে পারিবারিক জীবন কেমন কাটছে?

ভালো। একটু ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমার মেয়েরা (টাপুর-টুপুর) এখনো আমাদের সাথে আছে। ওরা পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পংয়ে পড়াশোনা করে। করোনার জন্য এক বছর আমাদের সঙ্গে থাকল। তাই নানা ধরনের অস্থিরতার ভেতরেও এটা একটা স্বস্তি ছিল। স্কুল খুলেছে, ওরা আবার চলে যাবে। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। হলেই চলে যাবে।

আপনার সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে বলুন…

এখন তো দুজনই আবার অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমি ‘মাশরাফি জুনিয়র’ নামে ডেইলিসোপে কাজ করছি। সতীর্থ ‘গুলশান এভিনিউ’ নামের ডেইলি সোপ পরিচালনা করছে।

দিনশেষে নিজেকে কতটুকু সময় দিতে পারেন?

অনেক কম। তবে মেয়েরা চলে গেলে আবার হাতে অনেকটা সময় থাকবে। তবে শত ব্যস্ততার মাঝেও একটু সময় নিজের জন্য বের করার চেষ্টা করি।

ঈদের কাজে কি নিয়মিত হতে পারবেন?

এখন নিয়মিতই কাজ করছি। তবে সিরিয়ালের জন্য সময় মেলানো কঠিন হতে পারে। তার পরও সবকিছু মিলিয়ে যদি ভালো লাগে এবং সময় মেলাতে পারি তাহলে নিশ্চয়ই করব।

ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমি নিজের কাছে সবসময় পরিষ্কার থাকতে চাই। হিপোক্রেসি একদম পছন্দ করি না। পারলে কারো উপকার করব, কিন্তু অপকার একদম নয়। নিজের কাজটাকে সবসময় দায়িত্ব নিয়ে করতে ভালোবাসি। নারী-পুরুষের চেয়ে সবাইকে এবং নিজেকে মানুষ হিসেবে ভাবতে এবং বিশ্বাস করতে ভালো লাগে।

অভিনয়ের ব্যস্ততা আর ব্যক্তিজীবনের ব্যস্ততার মধ্যে কি কোনো তফাত আছে?

আছে। অভিনয়ের ব্যস্ততার সঙ্গে অনেকগুলো মানুষ জড়িত। আর ব্যক্তিজীবনের ব্যস্ততার সঙ্গে নিজের পরিবারের মানুষ জড়িয়ে থাকে। দুটোই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

এর মধ্যে দেশের বাইরে যাচ্ছেন?

অভিনয়ের জন্য নয়, মেয়েদের স্কুল খুলেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ওদের নিয়ে ভারতে যেতে হবে।

বাসায় বসে নাটক কিংবা সিনেমা দেখা হচ্ছে?

সুযোগ পেলে দেখি। নিজের করা কাজ দেখি। ছবিও দেখা হয়। তুর্কি সিরিয়ালগুলো দেখি। ওদের কাজের মান খুব ভালো।

এখন সময় কাটে কীভাবে?

শুটিং, অনলাইন বিজনেস, ইউটিউব কনটেন্ট রেডি করা, মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটানো, ছবি দেখা, নাটক দেখা। তবে আগে বই পড়ার অভ্যাসটা বেশি ছিল এখন একটু কম পড়া হচ্ছে।

অভিনয়ের বাইরে সবচেয়ে বেশি কী মনে পড়ে?

আমার ছবি আঁকার সময়টা, গান শেখার সময়টা, বাগান করার সময়টা, আম্মুর সঙ্গে অলস সময় কাটানো আর টাপুর-টুপুরের ছোট বেলাটা ভীষণ মিস করি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *