এক হাজারের বেশি শিল্পী নিয়ে উৎসব শুরু

শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় নৃত্য উৎসবের উদ্বোধনী দিনে পরিবেশিত দলীয় নৃত্য

শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় নৃত্য উৎসবের উদ্বোধনী দিনে পরিবেশিত দলীয় নৃত্যছবি: দীপু মালাকার

‘এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের তরুণ প্রতিভাবান নৃত্য পরিচালকদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে দেশের সামগ্রিক নৃত্যধারার একটি ধারণা পাওয়া যাবে। দেশের নানা প্রান্তে শিল্পীরা কেমন কাজ করছেন, তা জানার সুযোগ যেমন সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি বিভিন্ন অঞ্চলের শিল্পীরা দেশের অন্যান্য অংশে কেমন কাজ করছেন, তা দেখারও সুযোগ পাবেন।’
শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হওয়া তিন দিনের নৃত্য উৎসবের উদ্বোধনীতে এমন মন্তব্য করেন বক্তারা। এবারের উৎসবে দেশের ২৫ জেলার ৭৫টি নৃত্য সংগঠনের নতুন পরিবেশনা থাকছে। অংশ নিচ্ছেন দেশের এক হাজার নৃত্যশিল্পী। মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির ‘ড্যান্স অ্যাগেইনস্ট করোনা’ শীর্ষক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ
বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

বৃহস্পতিবার বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব মো. আছাদুজ্জামান।বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির এক প্রাচীন শিল্পসত্তা হচ্ছে নৃত্য। নৃত্যের ভাষা সর্বজনীন। তাই ভাষার গণ্ডি পেরিয়ে দেশে দেশে নৃত্যকলা তৈরি করেছে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। শরীর, ছন্দ, মন ও সংগীত এসব নিয়ে নান্দনিক ছন্দিত শরীরী প্রতিমাই হলো নৃত্য। তাই নৃত্যকে বলা হয় সব শিল্পের জননী। ৭৫টি মৌলিক নতুন নৃত্য সৃজনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আসছে। যেখানে দেশের প্রথিতযশা নৃত্য পরিচালকসহ নবীন নৃত্য পরিচালকদেরও কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। যাঁরা এবার অংশ নিতে পারেননি আগামী সময়ে পর্যায়ক্রমে তাঁদের নিয়েও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

দলীয় নৃত্য
দলীয় নৃত্য

বিজ্ঞাপন

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, নৃত্যশিল্প বিকাশে সব সবময় বাধা এসেছে। কিন্তু শিল্পীসমাজ সে বাধাকে মোকাবিলা করে এ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান, এর আগে নৃত্য উৎসবে এক হাজারের বেশি শিল্পীর সমাবেশ কখনো হয়নি। সে বিচারে এটাই দেশের সবচেয়ে বড় নৃত্য উৎসব হতে যাচ্ছে। এ উৎসবে স্বনামধন্য নৃত্য পরিচালকসহ তরুণ প্রতিভাবান নৃত্য পরিচালকদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নৃত্যশিল্পীদের জন্য এ আয়োজন সম্মানের এবং অস্তিত্ব রক্ষার মন্তব্য করে মিনু হক বলেন, ‘এ উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনেক শিল্পী ও নৃত্য পরিচালকেরা নতুন নতুন কাজ নিয়ে উঠে আসবেন।’

এ উৎসবে স্বনামধন্য নৃত্য পরিচালকসহ তরুণ প্রতিভাবান নৃত্য পরিচালকদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে
এ উৎসবে স্বনামধন্য নৃত্য পরিচালকসহ তরুণ প্রতিভাবান নৃত্য পরিচালকদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে

উৎসবে উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনা করে নৃত্য সংগঠন ভাবনা। নৃত্য পরিচালক সামিনা হোসেনের পরিচালনায় শিল্পীরা ‘উদয়াচলের পথে’ শীর্ষক পরিবেশনায় বঙ্গবন্ধুর অবদান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেন শিল্পীরা।

উৎসবে উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনা করে নৃত্য সংগঠন ভাবনা
উৎসবে উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনা করে নৃত্য সংগঠন ভাবনা

এরপর ময়মনসিংহের দল নৃত্যগ্রাম মানস তালুকদারের পরিচালনায় পরিবেশন করে ‘স্বাধীনতার অনুগল্প’, বেনুকা ললিতকলা কেন্দ্র মো. গোলাম মোস্তফা খানের পরিচালনায় ‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক নৃত্য পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসে। মৌলভীবাজারের মণিপুরি থিয়েটার জ্যোতি সিনহার পরিচালনায় মঞ্চস্থ করে ‘রক্তবলাকা’। ভঙ্গিমা ডান্স থিয়েটার সৈয়দা সায়লা আহমেদের পরিচালনায় মঞ্চে আনে ‘বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ’। সাধনা উপমহাদেশীয় সংস্কৃতি প্রসার কেন্দ্র লুবনা মারিয়ামের পরিচালনায় মঞ্চস্থ করে ‘মহানন্দা ৭১’, আমানুল হকের পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যালে ট্রুপ মঞ্চস্থ করে ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’, র‌্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিসের পরিচালনায় বাংলাদেশ গৌড়ীয় নৃত্য একাডেমি মঞ্চস্থ করে ‘দিগম্বর দুত্যি’, অমিত চৌধুরীর পরিচালনায় কায়া আশ্রম পরিবেশন করে ‘অন্তর্দেশ’।

এ উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনেক শিল্পী ও নৃত্য পরিচালকেরা নতুন নতুন কাজ নিয়ে উঠে আসবেন
এ উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনেক শিল্পী ও নৃত্য পরিচালকেরা নতুন নতুন কাজ নিয়ে উঠে আসবেন

সিলেটের নীলাঞ্জনা যুঁইয়ের পরিচালনায় সিলেটের নৃত্যশৈলী উপস্থাপন করে চা বাগানের গল্পময় ‘মালনীছড়া’। এ ছাড়া এদিন আবু নাঈম, সাহিদা রহমান, সাইফুল ইসলাম, এম আর ওয়াসেক ও মো. মোফাসসাল হোসেনের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করে নাঈম খান ডান্স কোম্পানি, বহ্নিশিখা, ইভানস ড্যান্সপিরেশন, নন্দন কলা কেন্দ্র ও অ্যালিফিয়া স্কোয়াডের নৃত্যশিল্পীরা। প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান।

দলীয় নৃত্য
দলীয় নৃত্য
0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *