২০২০, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের এক রাউন্ডের খেলা শেষে স্থগিত হয়ে যায় আসর। সেই ১৯শে মার্চ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দেশের সব ধরনের ক্রিকেট স্থগিত ঘোষণা করেন। এরপর করোনা মহামারি কারণে টানা ৭ মাস ক্রিকেটাররা ব্যাট-বল তুলে রেখেছিলেন। গেল বছর অক্টোবর ও নভেম্বরে বিসিবি দুটি বিশেষ আসর আয়োজন করে দেশে ক্রিকেট ফেরায়। এমনকি এ বছর জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে বাংলাদেশ দল। তবে নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট লীগগুলো আয়োজন ছিল ভীষণ অনিশ্চয়তায়। অবশেষে এক বছর পর ক্রিকেটাররা পাচ্ছেন সুসংবাদ। গতকাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘যেহেতু আমাদের এফটিপি ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটা কনফার্ম করা আছে সেটাকে মাথায় রেখে আমাদের ঘরোয়া লীগের জন্যও ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটা ক্যালেন্ডার তৈরি করা হবে।
বিশেষ করে মূল যে টুর্নামেন্টগুলো আছে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ, বিপিএল, জাতীয় লীগসহ অন্যান্য টুর্নামেন্টগুলোর সূচি নির্ধারণ করার জন্য আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে প্রক্রিয়াগত কিছু ব্যাপার সংশ্লিষ্ট কমিটি থেকে সুপারিশ আসার পরই আমরা প্রকাশ করতে পারবো বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে। প্রাথমিকভাবে আমাদের চেষ্টা থাকবে যতদ্রুত সম্ভব ঘরোয়া ক্রিকেটকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। বর্তমানে আমাদের একটা সিরিজ চলছে ইমার্জিং দলের সঙ্গে। এই সিরিজের পরই আমরা চেষ্টা করবো ঘরোয়া ক্রিকেটকে ফিরিয়ে আনার।’
আয়ারল্যান্ড উলভসের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স ইউনিট এইচপি। এই সিরিজ শেষ হবে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ধারণা করা হচ্ছে মার্চের শেষ দিকে জাতীয় ক্রিকেট লীগ (এনসিএল) দিয়েই মাঠে ঘরোয়া ক্রিকেট গড়াবে। এরই মধ্যে এনসিএলের ৮ দলের ক্রিকেটাররা ইয়োইয়ো টেস্ট দিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন মাঠে নামার জন্য। তবে তাদেরকে করোনা ভ্যাকসিন দিয়েই শুরু হবে এই আসর। এই বিষয়ে সিইও বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি ভ্যাকসিনের জন্য তালিকা ইতিমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে পাঠানো হয়েছে। ইনফরমেশন পেয়েছি এটা প্রক্রিয়াধীন। এরপর সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে যত দ্রুত সম্ভব আমরা চেষ্টা করবো খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ ও গ্রাউন্ডসম্যানদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসতে।’ এছাড়াও এনসিএলই নয়, ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ, বিসিএল, বিপিএল এর জন্যও ক্যালেন্ডারে নতুন সময় ঠিক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির সিইও। তিনি বলেন, ‘বিপিএল পরবর্তী আসরের জন্য আমরা একটা স্লট বের করে রেখেছি। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমোদন সাপেক্ষে আমরা এটা প্রকাশ করবো।’
শ্রীলঙ্কায় ৭ দিনের কোয়ারেন্টিন
আগামী মাসে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফর নিশ্চিত। এপ্রিলের ১২ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যেই সেখানে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবে টাইগাররা। এর আগে এই সিরিজটি দুই দফায় স্থগিত হয়েছে। প্রথমবার করোনার ভয়ে সফরে যেতে রাজি হয়নি বিসিবি। আর দ্বিতীয়বার লঙ্কান সরকারের কঠিন কোয়ারেন্টিন শর্তের কারণে। তবে এবার লঙ্কায় সেই শর্ত সহজ করা হয়েছে। ৭ দিন কোয়ারেন্টিনের মধ্যে প্রথম তিন দিন সেল্ফ আইসোলেশন। সেখানেই হবে করোনা টেস্ট। আর তাতে নেগেটিভ হলে পরের ৪ দিন গ্রুপে ভাগ হয়ে অনুশীলনের সুযোগ পাবে টাইগাররা। এ বিষয়ে সিইও বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার যেটা বলেছি (আগে) তার বাইরে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। চূড়ান্ত শিডিউল আমাদের পাঠিয়েছে। আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট কিছু বিষয়ের অপেক্ষায়। সেটা হলে আশা করছি দুই একদিনের মধ্যে সূচি প্রকাশ করবো। অবশ্যই এটা (কোয়ারেন্টিন) কনসার্ন ছিল আমাদের। ইতোমধ্যে আপনারা জানেন ইংল্যান্ড দল শ্রীলঙ্কা সফর করেছে। তো আমাদের ক্ষেত্রেও একই প্রটোকল থাকবে। বলা হচ্ছে প্রথম তিনদিন রুম কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। এরপর করোনা নেগেটিভ সাপেক্ষে অনুশীলন ও অন্যান্য কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারবে দল।’
আফগানদের বিপক্ষে ভারতে যুব দলের লড়াই
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবার নতুন করে যুব দল প্রস্তুত হচ্ছে আকবর আলীদের সেই কৃতিত্ব ধরে রাখতে। করোনার কারণে লম্বা সময় ধরেই ঘরের মাঠে চলছে তাদের প্রস্তুতি। অবশেষে এবার সুযোগ এলো নয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠে নামার। আগামী মাসেই আফগানিস্তানের আমন্ত্রণে ভারতে খেলতে যাবে যুব দল। এ বিষয়ে বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যুব ক্রিকেটে আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। সেক্ষেত্রে বাড়তি কিছু পরিকল্পনাতো ছিলই। কোভিড প্রটোকলের কারণে আমরা এগুলো বাস্তবায়ণ করতে পারিনি। যে সুযোগ সুবিধা পাওয়া সম্ভব সেগুলোই আমরা নিতে পেরেছি। সামনে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের একটা সফর আছে ভারতে, তারা আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে খেলবে।’