যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইলেক্টোরাল কলেজ জো বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করলে তিনি হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাবেন। পাশাপাশি ভোট জালিয়াতির প্রমাণহীন অভিযোগ তুলে তিনি এও বলেছেন, তিনি কখনই হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে পরাজয় মেনে নেবেন না, এমনকি বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানও বয়কট করতে পারেন। খবর বিবিসি ও ব্লুমবার্গ।
৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমে কথা বললেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি জানান, লড়াই শেষ হতে এখনো অনেক বাকি!
রাজ্যগুলো আলাদাভাবে ফল ঘোষণা করেছে, যাতে দেখা যায় বাইডেন বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে জয়লাভ করেছেন। ইলেক্টোরাল কলেজে ৫৩৮টি ভোটের মধ্যে বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬টি, ট্রাম্পের বাক্সে জমা পড়েছে ২৩২টি। একজনকে বিজয়ী হতে ২৭০টি ভোট পেলেই চলে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর ইলেক্টোরাল ভোটাররা মিলিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল চূড়ান্ত করবেন, আর নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন ২০ জানুয়ারি।
নির্বাচন নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের করেন ট্রাম্প ও তার অনুসারীরা, যার বেশির ভাগই খারিজ হয়ে যায়।
কয়েক সপ্তাহের অনিশ্চয়তার পর অবশেষে গত সপ্তাহে ট্রাম্প ক্ষমতা হস্তান্তরের ইঙ্গিত দেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে তিনি দ্য জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে (জিএসএ) নির্দেশ দেন। সেদিনও তিনি বলছিলেন, নির্বাচনে এখনো হার মেনে নেননি এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবেন ও তিনিই জয়লাভ করবেন।
সেই থেকে জিএসএ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে, ফলে সরকারি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে দপ্তর ও অর্থ ব্যবহারের সুযোগ লাভ করে বাইডেনের দল।
‘থ্যাংকস গিভিং ডে’ উপলক্ষে হোয়াইট হাউজ থেকে বিশ্বব্যাপী মার্কিন সেনাসদস্যদের উদ্দেশে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে হেরে গেলে তিনি কি হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাবেন? ট্রাম্পের ঝটপট উত্তর, অবশ্যই আমি যাব, অবশ্যই এবং আপনারা তা জানেন।
যদিও প্রেসিডেন্ট বলে যান, তারা যদি তা করেন (বাইডেনকে নির্বাচিত করা), তবে ভুল করবেন। আসলে ফল মেনে নেয়া কঠিন, কারণ আমরা জানি অনেক বড় কারচুপি হয়েছে।
ভোট কারচুপির অভিযোগ তুললেও এখনো তার সপক্ষে প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প অবশ্য অভিযোগ করেই যাচ্ছেন। তার কথায়, গোটা বিশ্ব দেখছে এবং গোটা বিশ্বই আমাদের ইলেক্টোরাল প্রক্রিয়া নিয়ে হাসছে।
ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তিনি জর্জিয়ার রিপাবলিকান সেক্রেটারিকে ‘জনতার শত্রু’ বলে অভিহিত করেন। জানুয়ারির সিনেট নির্বাচন সামনে রেখে শিগগিরই জর্জিয়ায় সমাবেশ করার ইচ্ছাও পোষণ করেন ট্রাম্প। তিনি আরো বলেন, দেখুন, পেনসিলভানিয়ায় আমার হারার কোনো সুযোগই নেই।
২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা, কিংবা বাইডেনের অভিষেকে যোগ দেবেন কিনা, সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি অভিষেক বয়কট করবেন। এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, সত্য বলতে কি, আমি উত্তরটা জানি, কিন্তু এখনই আমি তা বলতে চাই না।
বাইডেন এখনই কেবিনেট গঠন শুরু করেছেন, যা মোটেও ‘সঠিক কাজ’ নয় বলে মনে করছেন ট্রাম্প।