অ্যামাজনকে ১২৮ কোটি ডলার জরিমানা ইতালির

বাজারে একচেটিয়া অবস্থানের অপব্যবহারের অভিযোগে অ্যামাজনকে ১১৩ কোটি ইউরো বা ১২৮ কোটি ডলার জরিমানা করেছেন ইতালির অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ন্ত্রকরা। ইউরোপে এটি যেকোনো মার্কিন কোম্পানির জন্য বড় একটি জরিমানা হতে যাচ্ছে। খবর সিএনবিসি ও রয়টার্স।

দি অটোরিটা গ্যারান্টে ডেলা কনকরেঞ্জা ই ডেল মার্কেটো বা এজিসিএমের অভিযোগ, ই-কমার্স লজিস্টিকস সেবা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর ক্ষতি করেছে। বাজারে শীর্ষস্থানের সুযোগ নিয়ে অ্যামাজন ইতালি প্লাটফর্মে বিক্রেতাদের নিজস্ব লজিস্টিকস সেবা ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন (এফবিএ) গ্রহণে উৎসাহিত করেছে।

ইতালির বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এফবিএ লজিস্টিকস সেবা গ্রহণকারীদের বেশকিছু এক্সক্লুসিভ সুবিধা দিচ্ছে অ্যামাজন। এর মধ্যে রয়েছে প্রাইম লেভেল, যা গ্রহণে পণ্যের দৃশ্যমানতা বাড়ে, অ্যামাজন ইতালি ওয়েবসাইটে চাঙ্গা বিক্রি হয়।

অন্যদিকে প্লাটফর্মে তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতাদের যারা এফবিএ সেবা গ্রহণ করেননি, তাদেরকে এ প্রাইম লেভেল দেয় না অ্যামাজন।

কোনো পণ্যে প্রাইম লেভেল থাকার মানে হচ্ছে তা অ্যামাজনের সবচেয়ে অনুগত ও উচ্চ ব্যয়কারী ৭০ লাখেরও বেশি ভোক্তা সদস্যদের কাছে পৌঁছানো।

অ্যামাজন বলছে, তারা এ রায়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করছে এবং এর বিরুদ্ধে আপিল করতে যাচ্ছে। সিএনবিসিকে অ্যামাজনের এক মুখপাত্র জানান, প্রস্তাবিত জরিমানা অন্যায্য ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

অ্যামাজন বলছে, তাদের প্লাটফর্মে বার্ষিক বিক্রির ৫০ শতাংশেরও বেশি আসছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসা থেকে এবং তাদের সফলতার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখছে অ্যামাজনের ব্যবসায়িক মডেলটি।

অ্যামাজন আরো জানায়, এফবিএ হচ্ছে সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক সেবা এবং অ্যামাজনে তৃতীয় পক্ষের অধিকাংশ বিক্রেতা এ সেবা গ্রহণ করেন না। যখন কোনো বিক্রেতা এফবিএ সেবা গ্রহণ করেন, তারা এ সেবার মানের জন্য তা করেন। কারণ এফবিএ হচ্ছে সবচেয়ে দক্ষ, সহজতর ও সাশ্রয়ী সেবা।

উইলয়াম ও’নিল প্লাস কোম্পানির রিটেইল ইকুইটি রিসার্চের প্রধান রুহেল আমিন সিএনবিসিকে জানান, ই-কমার্স জায়ান্টটির জন্য এটি অনেক বড় জরিমানা। প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর বিরুদ্ধে ইউরোপ সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, সে প্রবণতারই প্রতিফলন ঘটেছে বড় অংকের এ জরিমানায়।

বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও যে ই-কমার্স কোম্পানিগুলো জরিমানার মুখোমুখি হচ্ছে, সে বিষয়টি সামনে আনেন রুহেল আমিন। যেমন চীনে আলিবাবা ও লাতিন আমেরিকায় মার্কেডো লিব্রে নিয়ন্ত্রকদের জরিমানার শিকার হয়েছেন।

গ্রাহকদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং প্লাটফর্মে ভুল ও মিথ্যা তথ্য সরবরাহের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই নিয়ন্ত্রকদের কড়া নজরদারির মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্টগুলো। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাজারে একচেটিয়া বা শক্তিশালী অবস্থানের অপব্যবহার ও প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের অভিযোগ। অ্যামাজনের পাশাপাশি ইউরোপে উচ্চ নজরদারির মধ্যে রয়েছে অ্যালফাবেট মালিকানাধীন গুগল, ফেসবুক, অ্যাপল ও মাইক্রোসফটের মতো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্ট।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *