শোকে কাঁদছেন মিয়ানমারের বেসামরিক জনগণ। শনিবার সামরিক জান্তার গুলিতে শতাধিক মানুষের প্রাণহানীতে তাদের ভাষা যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। তবে শোক পরিণত হয়েছে শক্তিতে। সামরিক জান্তার গুলিতে এক দিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ হত্যায় যুক্তরাষ্ট্র ভীতসন্ত্রস্ত। এর কড়া নিন্দা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি বলেছেন, মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য জনজীবনকে কোরবানি করতেও দ্বিধা করছে না সামরিক জান্তা। মিয়ানমারের সাহসী মানুষ সামরিক জান্তার সন্ত্রাসের রাজত্বকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে বলা হয়েছিল, নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। অন্যদিকে শনিবার মিয়ানমারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিরা শনিবার মিয়ানমারের জন্য একটি সন্ত্রাস ও অসম্মানের ভয়াবহ দিন হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন। এ দিনটি সরকারিভাবে আসলে ছিল সশস্ত্র বাহিনী দিবস। কিন্তু এ দিনটিকে তারা রক্তমাখা সবচেয়ে কলঙ্কিত দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে গেল। এত বিপুল পরিমাণ মানুষের প্রাণহানীতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাপরিচালক অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। অন্যদিকে এটাকে নতুন মাত্রায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নি¤œতম স্তরে পৌঁছে যাওয়া বলে আখ্যায়িত করেছেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব।
শনিবার সামরিক জান্তার সব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মিয়ানমারের রাজপথে নামে শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, যুবাদের ঢল। তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী দমনপীড়ন চালায় জান্তা সরকার। অ্যাসিসট্যান্স এসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) নামের নজরদারিকারী গ্রুপ নিশ্চিত করে বলেছে, কমপক্ষে ৯১ জন এদিন মারা যাওয়ার কথা রিপোর্ট করেছে স্থানীয় মিডিয়া। কিন্তু এই সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত মিঙ্গিয়ান শহরের অধিবাসী থু ইয়া জাওয়া বলেছেন, তারা আমাদেরকে পাখি, মোরগ-মুরগির মতো হত্যা করছে বাড়িঘরেই। তা সত্ত্বেও আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখব। ১লা ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে সামরিক জান্তার হাতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪০০ মানুষ।