মোদির সফর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের সঙ্গে যোগসূত্র নেই

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা তৈরিতে কাউকে উস্কানি না দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান একটি গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আমন্ত্রণ বাতিল করার বিষয়ে চক্রান্ত করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে প্রধান মিত্র দেশ ছিল ভারত। তাই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের সরকার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তিবিশেষকে নয়। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন বা অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে যোগসূত্র নেই, তিনি আমন্ত্রিত অতিথি। ‘সরকারকে পরাজিত করতে বিএনপি সংগঠিত হতে শুরু করেছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হলে ভালো কিন্তু দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে যদি অস্থিরতা তৈরি করার জন্য সহিংসতার উপাদান যুক্ত করা হয় তাহলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যেকোনো অপচেষ্টা মোকাবিলা করবে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি প্রথম প্রশাসনে রাজনীতিকরণ শুরু করে আর শেখ হাসিনা সরকার প্রশাসনকে রাজনীতি মুক্ত করে এবং মেধার সন্নিবেশ ঘটায়। বর্তমান প্রশাসন অনেক দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন।
তিনি বলেন, রূপকল্প-২০২১, এসডিজি, রূপকল্প-২০৪১ তথা ডেল্টাপ্ল্যানসহ দীর্ঘমেয়াদি ভিশন বাস্তবায়নের জন্য সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান প্রশাসন। ‘সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের জন্য আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে’- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। উচ্চ ও নিম্ন আদালতে সরকারের কোনোরূপ হস্তক্ষেপ নেই। এ জন্যই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছে এবং অনেকে সাজা ভোগ করছে। তিনি বলেন, সরকার বা আওয়ামী লীগ স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় বিশ্বাসী বলেই বিশ্বজিৎ, নুসরাত, আবরার ও বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দলীয় কর্মীদের রক্ষা করতে যায়নি। আইনের প্রতি সম্মান আছে বলেই বিচারিক প্রক্রিয়াকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করতে চায় না, বরং বিএনপিই দ্বিচারিতার আশ্রয় নেয় আইন- আদালতকে ঘিরে। করোনায় আক্রান্ত এবং প্রাণহানির সংখ্যা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে, তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদারের কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, লোকসমাগম, মার্কেট, স্টেশন, ফেরি ইত্যাদি এলাকায় অনেকেই মাস্ক পরিধান করছেন না, যে জীবনযাপনের জন্য আমরা ব্যস্ত, মাস্ক পরিধান না করার মতো অবহেলা আমাদের প্রিয় জীবন থেকে ছিটকে দিতে পারে। ওবায়দুল কাদের নিজের এবং পরিবার পরিজন, সন্তানদের কথা ভেবে হলেও শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে সচেতনতা তৈরিমূলক প্রচার অভিযান চালানোর অনুরোধ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এখন থেকে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য দলীয় সভাপতির নির্দেশে আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসহ সকল শাখা এবং সহযোগী সংগঠনসমূহকে জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়াও ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২৫শে মার্চ সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *