মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে এক নম্বরে চীনের বক্সঅফিস

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বে ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে। গত বছর মহামারীতে সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়াই এ সংখ্যাবৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। হলিউডের মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতি বছরই মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন বৈশ্বিক বক্সঅফিসের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গত বছরের প্রতিবেদন তৈরি করতে খুব একটা ভালো লাগেনি সংগঠনটির। কারণটা সবারই জানা। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে বন্ধ ছিল সিনেমা হল। উল্টোদিকে রমরমিয়ে বেড়েছে ডিজিটাল প্লাটফর্মের বিস্তৃতি।

যুক্তরাষ্ট্রে ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২০২০ সালে তার আগের বছরের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেড়েছে। বৈশ্বিক মোবাইল/হোম এন্টারটেইনমেন্ট বাজার ২০২০ সালে আয় করেছে প্রায় ৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এ আয় ছিল ২০১৯ সালের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি।

মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বক্সঅফিস ছিল ২২০ কোটি মার্কিন ডলারের। আগের বছরের তুলনায় এটা ছিল ৮০ শতাংশ হ্রাস। হ্রাসের এ অংকটা হলিউডের ইতিহাসে অভূতপূর্ব। বৈশ্বিক বক্সঅফিস গত বছর ছিল ১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের। অর্থাৎ আয় সংকুচিত হয়েছে ৭২ শতাংশ। নুতন ছবির কাজ শুরু হওয়ার পরিমাণ কমেছে ৪৬ শতাংশ।

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে চীনের বক্সঅফিস বিশ্বের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র বাজারে পরিণত হয়েছে ২০২০ সালে। চীনের বক্সঅফিসে গত বছর আয় হয়েছে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল জাপান, তাদের আয় ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

বিশ্বজুড়ে মহামারীর দিনগুলোতে বিনোদন বাণিজ্যকে রক্ষা করেছে স্ট্রিমিং কিংবা ওটিটি প্লাটফর্ম। মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান-সিইও চার্লস রিভকিন বলেছেন, গত বছরটা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। সত্যি বলতে জীবনের সব ক্ষেত্রই তাই ছিল। অসংখ্য মৃত্যু, ফ্রন্ট লাইন কর্মীদের মৃত্যু, চাকরি ও বাণিজ্যের বেহাল দশা এবং বিভিন্ন খাতের একেবারে অচলাবস্থা। চলচ্চিত্র শিল্পও ব্যতিক্রম নয়। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। ছবির প্রডাকশন বন্ধ হয়ে গেছে, নয়তো সংকুচিত হয়েছে। সব দেশেই সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ভালো খবর হচ্ছে ঘর আর ল্যাপটপে আবদ্ধ হয়ে থেকেও মানুষ সিনেমা হলে যাওয়ার অভ্যাস হারিয়ে ফেলেনি।

মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন তাদের জরিপ থেকে জানিয়েছে, ২০২০ সালে মানুষ বাসায় বসে সবচেয়ে বেশি দেখেছে ফ্রোজেন টু। আর সবচেয়ে বেশি দেখা স্ট্রিমিং সিরিজ ছিল ওজরাক।

যুক্তরাষ্ট্রে দেখা গেছে ঘরে থেকে ৮৬ শতাংশ শিশু ও ৫৫ শতাংশের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কনটেন্ট দেখেছে মোবাইল ফোনে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *